ঢাকা | রবিবার
২৬শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১২ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হলুদ ফুলে রঙিন স্বপ্ন

হলুদ ফুলে রঙিন স্বপ্ন

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে। দেখে মনে হচ্ছে কেউ যেন বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে হলুদ গাঁদা ফুলের বাগান তৈরি করেছে। চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় সরিষা চাষ বেশি হয়েছে। স্বল্প সময়ে সরিষা চাষ হওয়ায় সরিষা চাষে তাদের আগ্রহ বেশি। স্বল্প পুঁজিতে বেশি লাভজনক হওয়ায় এ বছর সরিষার আবাদ বেশি হয়েছে। আমন ধান কাটার পর জমি চাষ করে এ সরিষার চাষ করা হয়। আবার সরিষা কাটার পর সেই জমিতেই ইরি-বোরো আবাদ করা হবে।

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি বছর ৭৬৫ হেক্টরে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ৮২০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় ৬০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ বেশি হয়েছে। একই জমিতে বছরে একাধিক ফসল ফলাতে কৃষিতে সকল ফসলের প্রণোদনার অংশ হিসেবে সরিষা ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বিস্তীর্ণ মাঠ সষিরার হলুদ ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে। আর মৌমাছিরাও সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, কম খরচ আর বেশি লাভের আশায় এবার সরিষা আবাদের দিকে ঝুঁকেছেন কৃষক। গত কয়েক বছরে এ এলাকার চাষিরা মধ্যবর্তী ফসল হিসেবে স্বল্পপরিসরে সরিষা চাষ করলেও ব্যাপক লাভবান হওয়ায় এবার সরিষা চাষ বেশি হচ্ছে।

পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের গহরপুর গ্রামের সরিষা চাষি অধ্যক্ষ সুলতান আহমেদ বলেন, চলতি বছর ১৫ একর জমিতে সরিষার চাষ করেছি। আমন এবং বোরো চাষের মধ্যবর্তী সময়ে সরিষা চাষ করলে মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। পরের ফসলের জন্য খুব বেশি চাষ করতে হয় না। জৈব সারও দিতে হয় না। অন্যদিকে কম খরচে মাত্র দুটি চাষ দিয়েই সরিষা চাষ করা যায়। সরিষা আবাদে কোনো প্রকার সেচ লাগে না। সার ও কীটনাশকও প্রয়োগ করতে হয় না। কম খরচে বেশি লাভ ও স্বল্প সময়ে সরিষার ফসল ঘরে তোলা যায় বলে একটি জমিতে তিনবার আবাদ করা যায়। এ কারণেই দিন দিন সরিষার আবাদ বাড়ছে।

খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের দোহল পাড়া গ্রামের মনসুর আলী জানান, এক একর জমিতে সরিষা আবাদ করতে খরচ হয় মাত্র ১০ হাজার টাকা। প্রতি একরে ১২ মণ সরিষা উৎপাদন হয়। বাজারে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা মণ দরে সরিষা বিক্রি হয়। ফলে খরচের দ্বিগুণ লাভ হয় চাষিদের।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেকেন্দার আলী বলেন, উপজেলার কৃষকদের মাঝে সরকারিভাবে সরিষা বীজ প্রদান, বিভিন্ন গ্রামে ক্ষেত পরিদর্শনসহ ভালো ফলন পেতে কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে আসছি। চলতি বছর তেল ও খৈলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষিরা অধিক পরিমান জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। এবার উচ্চ ফলনশীল জাতের মধ্যে রয়েছে বারি সরিষা-১৪ ও ১৫ জাত। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফলন এবং বাজার দরে কৃষকরা অধিক লাভবান হবেন বলে আশা করছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন