ঢাকা | বৃহস্পতিবার
১২ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডিজিটালের পরেও নজর উপশাখায়

ডিজিটালের পরেও নজর উপশাখায়

ডিজিটাল কার্যক্রমের পাশাপাশি সেবার পরিধি সম্প্রসারিত করতে ব্যাংকগুলো উপশাখা খোলার দিকে নজর দিয়েছে। খরচ কম হওয়ার পাশাপাশি কম জনবল দিয়ে পূর্ণ শাখার মতো কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ থাকায় বেশির ভাগ ব্যাংক নতুন নতুন উপশাখা খুলছে। উপজেলা, ইউনিয়ন এবং গ্রাম পর্যায়ে এসব উপশাখা খোলা হচ্ছে। মূলত ঘরে ঘরে ব্যাংক সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্যই শাখা খোলার প্রবণতা বাড়ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, গত বছরের ডিসেম্বরে ব্যাংক খাতে মোট উপশাখা ছিল এক হাজার ১৪৭টি। চলতি বছরের জুন শেষে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় এক হাজার ৬৭২টিতে। গত ছয় মাসে আরো বেশি শাখা খোলা হয়েছে। ব্যাংক কর্মকর্তাদের মতে, প্রতিবছর শাখা খোলার টার্গেট থাকে। সারাবছর সেই টার্গেট পূরণ করা হয়। তবে বছর শেষে দেখা যায় সে টার্গেট পূরণ হয়নি। এজন্য বছর শেষে বিশেষ করে ডিসেম্বর মাসে শাখা খোলার ধুম লেগে যায়।

তবে কর্মকর্তারা আরো বলছেন, করোনার কারণে ব্যাংকগুলো শাখা খোলা কমিয়ে দিয়েছিল। করোনার দাপট কিছু কমে আসায় সেই পরিকল্পনা পরিবর্তন হয়েছে। তাছাড়া বছরে শাখা খোলার যে টার্গেট থাকে তা যখন পূরণ হয় না, তখন সেটা পূরণ করার জন্য ডিসেম্বরকে বেছে নেয়া হয়।

এবারও চলতি ডিসেম্বরে ব্যাংকগুলো নতুন শাখা খোলার লক্ষ্য পূরণ করছে। এমনও হচ্ছে, একদিনে একাধিক শাখাও খুলছে কোনো কোনো ব্যাংক। তথ্যমতে, গত সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোর শাখার সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ৮০৮টি। চলতি ডিসেম্বর শেষে তা ১০ হাজার ৯০০ ছাড়িয়ে যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর ব্যাংকগুলো মোট ৩০০ থেকে ৩৫০টি নতুন শাখা চালু করে। এর মধ্যে একশর বেশি শাখা খোলা হয় শুধু ডিসেম্বর মাসে। তথ্যমতে, করোনা শুরুর বছর ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ব্যাংকগুলো মোট ১২৪টি নতুন শাখা চালু করেছিল। আগের বছর ২০১৯ সালের একই মাসে নতুন শাখা খোলা হয়েছিল ১১১টি। আর ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে খোলা হয়েছিল ৭৪টি শাখা। এবারেও ডিসেম্বরে এসে প্রচুর শাখা খুলছে ব্যাংকগুলো।

ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে শাখা সংখ্যায় গত জুন পর্যন্ত শীর্ষে ছিল সোনালী ব্যাংক। সোনালীর পেছনেই রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি)। এই ব্যাংকেরও গ্রামগঞ্জে শাখা বেশি। গত জুনে বিকেবির শাখার সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৩৮টি। একই সময়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ ৯৬০টি শাখা ছিল অগ্রণী ব্যাংকের। এগিয়ে থাকা অন্যদের মধ্যে জনতা ব্যাংকের ৯১৩টি, রূপালী ব্যাংকের ৫৮৩টি, পূবালী ব্যাংকের ৪৮২টি ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) ৩৮৩টি শাখা ছিল।

বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মধ্যে গত জুন শেষে সর্বোচ্চ ৩৭৪টি ছিল ইসলামী ব্যাংকের। একই সময়ে উত্তরা ব্যাংকের ২৪১টি, ন্যাশনাল ব্যাংকের ২১৩টি, ডাচ্–বাংলার ২১০টি, ইউসিবিএলের ২০৪টি, আল-আরাফাহ ইসলামীর ১৯১টি, ফার্স্ট সিকিউরিটির ১৯০টি, সোশ্যাল ইসলামীর ১৬৮টি ও ব্র্যাক ব্যাংকের ১৬৭টি শাখা ছিল। অন্য ব্যাংকগুলোর শাখা এর চেয়ে কম।

বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, অনেক ব্যাংক সেবা বাড়ানোর জন্য শাখা খুলছে। আবার কোনো কোনো ব্যাংক লোকবল নিয়োগের উদ্দেশ্যে নতুন শাখা চালু করছে। নতুন শাখা খোলার মাধ্যমে কোনো কোনো ব্যাংকের মালিকেরা নিজ নিজ এলাকার তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছেন।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন