দেশের অন্যতম বৃহৎ সবজির বাজার যশোরের সাতমাইল-বারিনগর। প্রতি বছর এ বাজারে অন্তত ৫০০ কোটি টাকার সবজি বিক্রি হয়। এ বছর বাজারটিতে পাইকাররা সবজির যে দাম দিচ্ছেন, তা ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
যশোর শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে সাতমাইল-বারিনগর সবজির বাজার ঘুরে দেখা যায়, ক্ষেত থেকে সবজি তুলে বিক্রির জন্য নিয়ে আসছেন বারিনগর, চূড়ামনকাটি, হৈবতপুর, আব্দুলপুরসহ আশপাশ এলাকার কৃষকরা। তারা জানান, বর্তমানে প্রতিদিন এ সবজি বাজার বসছে। পাইকাররা তাদের আশানুরূপ সবজির দামও দিচ্ছেন।
কৃষক জামাল হোসেন জানান, গতকাল সাত মণ ফুলকপি আনছিলাম। পাইকারি হিসেবেই সেগুলো প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে বিক্রি করসি। একই গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গির আলম পাঁচ মণ শিম এনেছিলেন, যা তিনি প্রতি কেজি ৩৫ টাকা দরে বিক্রি করেছেন।
চট্টগ্রামের পাইকারি সবজি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বর্তমানে বাজারে সবজির দাম অনেক বেশি। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই সাতমাইল-বারিনগর হাট থেকে সবজি কিনে ফেনী ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করেন। এবার এ বাজারে সবজির দাম অন্য বছরের থেকে কয়েক গুণ। গত ১০ বছরে এ বাজারে সবজির পাইকারি দাম এত বেশি হয়নি।
তিনি জানান, এখন শীতকালীন সবজির ভরা মৌসুম। তাই ফুলকপি প্রতি কেজি পাইকারি সর্বোচ্চ ১০-১২ টাকা হওয়ার কথা। কিন্তু তা বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। ১৮-২০ টাকা কেজির কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৮-৩০ টাকায়।
সাতমাইল সবজি বাজারের ইজারাদার মো. শাহজাহান বলেন, এখানে প্রতি হাটে কমপক্ষে এক থেকে দেড় কোটি টাকার সবজি পাইকারি বিক্রি হয়। এবার চাষীরা তাদের সবজির ভালো দাম পাচ্ছেন। পাইকাররা এ হাট থেকে ট্রাকে করে ঢাকা, খুলনা, চট্টগ্রাম, ফরিদপুর, বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সবজি নিয়ে যায়।
যশোর আঞ্চলিক কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি আবাদের লক্ষ্য নির্ধারণ হয়। এর মধ্যে এবারো সবচেয়ে বেশি সবজি আবাদ হয়েছে সদর উপজেলার চূড়ামনকাটি, হৈবতপুর ও কাশিমপুর ইউনিয়নে। হৈবতপুরে ১ হাজার ৬৩০, চূড়ামনকাটিতে ৮২৮ হেক্টর ও কাশিমপুরে ৫৫৩ হেক্টর জমিতে এবার শীতকালীন সবজির আবাদ হয়েছে।
আনন্দবাজার/ইউএসএস