ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এক ডকুমেন্টেই মিলবে একাধিক সঞ্চয়পত্র

এক ডকুমেন্ট মিলবে একাধিক সঞ্চয়পত্র

কেনাবেচায় ডিজিটাইজেশন——-

  • প্রথম ডকুমেন্টেই কেনা যাবে ইচ্ছেমতো
  • একটি বিধিমালার অধীনে আসছে চার স্কিম

প্রতিটি সঞ্চয়পত্রের জন্যই ডকুমেন্ট (ক্রেতা ও নমিনির জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, ছবি, টিআইএন) দিতে হয়। যা গ্রাহকের জন্য অতিরিক্ত শ্রম এবং সময়ের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। এবার গ্রাহকের সঞ্চয়পত্র ক্রয়-বিক্রয় কার্যক্রম আরও সহজ করতে যে কোনো স্কিমের সঞ্চয়পত্র প্রথমবারের পর দ্বিতীয়বার কিনতে আর কোনো ডকুমেন্ট দিতে হবে না। প্রথমবার দেওয়া ডকুমেন্ট ব্যবহার করেই পরে ইচ্ছেমত সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে।

সঞ্চয়পত্র ক্রয়-বিক্রয় কার্যক্রমের সংশোধিত বিধিমালার মাধ্যমে অনলাইনে একটি প্লাটফর্মে এনে গ্রাহকদের এই সুবিধা প্রদানের কাজ চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর। এটি কার্যকর হলে ব্যাংক ও ডাকঘরের কার্যক্রম সহজ হওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে সেবা নিতে পারবেন গ্রাহকরা।

এ বিষয়ে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের পরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, বিভিন্ন সময় বিচ্ছিন্নভাবে কিছু আদেশ হয়েছে। আমাদের যে চারটি সঞ্চয় স্কিম আছে। অনলাইন সিস্টেম চালুর ফলে কিছু কিছু বিষয় নতুন করে যুক্ত হয়েছে। যেমন- জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) লাগবে। এগুলো পুরনো আইনে ছিল না।

এগুলোকে যুক্ত করে সঞ্চয়পত্র সংশোধিত বিধিমালা নাম দেওয়া হয়েছে। সঞ্চয়পত্র ক্রয়-বিক্রয় কার্যক্রম ডিজিটাইজেশনের অংশ হিসেবে সঞ্চয়পত্রের চারটি স্কিমের জন্য একটি বিধিমালা করা হচ্ছে। এ সংক্রান্ত খসড়া অনুমোদনের জন্য অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদনের পর নতুন নীতিমালা কার্যকর হলে গ্রাহক একবার ডকুমেন্ট দিলে সবগুলো স্কিমের সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন। ব্যাংক ও ডাকঘরের কার্যক্রম সহজ হবে।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে পাঁচ বছর মেয়াদী পরিবার সঞ্চয়পত্র, পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিনমাস অন্তর অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও পেনশনার সঞ্চয়পত্র সরকারের ব্যয় ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ কর্মসূচির অধীতে প্রনীত সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিক্রি হচ্ছে।

তিনমাস অন্তর অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র বিক্রি হচ্ছে সঞ্চয়পত্র বিধিমালা ১৯৭৭ মোতাবেক। পাঁচ বছর মেয়াদী পরিবার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হচ্ছে পরিবার সঞ্চয়পত্র বিধিমালা ২০০৯ এবং পেনশনার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হচ্ছে পেনশনার সঞ্চয়পত্র বিধিমালা ২০০৯ মোতাবেক। পাঁচ বছর মেয়াদী পরিবার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে পারেন ১৮ বছর বা তার বেশী বয়সী নারী, প্রতিবন্ধি পুরুষ-মহিলা ও ৬৫ বছরের উর্ধে নারী-পুরুষ। পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র ও তিনমাস অন্তর অন্তর মুনাফা স্কিম ক্রয় করতে পারে নারী-পুরুষ উভয়।

পেনশনার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে পারে অবসর প্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং মারা যাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীর উত্তরাধিকারগণ। এগুলোর জন্য বিভিন্ন সময় অর্ডার জারি হয়েছে। এসব অর্ডারের সঙ্গে আরও কিছু বিষয়টি যুক্ত করে সঞ্চয়পত্র সংশোধিত বিধিমালা চুড়ান্ত করা হয়েছে। এসব সঞ্চয়পত্র আলাদা আলাদা বিধিমালার মাধ্যমে বিক্রয় করা হলেও ক্রেতাকে প্রায় একই ধরনের ডকুমেন্ট দিতে হয়।

সঞ্চয়পত্রে কালো টাকার বিনিয়োগ বন্ধ, প্রকৃত সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছানো নিশ্চিত করতে সরকার ২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি অনলাইনে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কার্যক্রম চালু করে সরকার। আরোপ করা হয় নতুন কয়েকটি শর্ত। ৫০ হাজার টাকার বেশি অর্থের সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের জন্য টাকা দিতে চেকের মাধ্যমে। দুই লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনলে দিতে টিআইএন সনদ।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন