ঢাকা | শনিবার
৩রা মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
২০শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বেআইনিভাবে পাচার হচ্ছে বন্যপ্রাণী

বেআইনিভাবে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে দেশের বন্যপ্রাণীর ব্যবসা, গড়ে উঠেছে বন্যপ্রাণীর বিভিন্ন ক্রেতাশ্রেণী। শুধু তা-ই নয়, আন্তর্জাতিক পাচারকারী চক্রের কাছে বন্যপ্রাণীর অন্যতম প্রধান উৎসও হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

‘২০১৯ এন্ড ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাফিকিং রিপোর্ট’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বন্যপ্রাণী পাচারের ট্রানজিট ও প্রধান উৎস হিসেবে ২৮টি ফোকাস দেশের কথা বলা হয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশের নামও আছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর দেশটির স্বরাষ্ট্র ও বাণিজ্য দপ্তর এবং ইউএসএআইডির সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ফোকাস দেশের এ তালিকা তৈরি করেছে।

বাংলাদেশও বন্যপ্রাণী পাচার চক্রের কাছে অন্যতম প্রধান উৎস ও ট্রানজিট দেশ। বাংলাদেশ থেকে তারা মূলত বেলজিয়াম, জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসে বন্যপ্রাণীজাত পণ্য পাচার করে থাকে। এছাড়া দেশের অভ্যন্তরেও একটি ক্রেতাশ্রেণী গড়ে উঠেছে তাদের।

বন্যপ্রাণীর পণ্য পাচারে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ফোকাস তালিকায় থাকা অন্য দেশগুলো হচ্ছে ব্রাজিল, মিয়ানমার, কম্বোডিয়া, ক্যামেরুন, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো,  ভারত, ইন্দোনেশিয়া, কেনিয়া, লাওস, মাদাগাস্কার, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, চীন, ফিলিপাইন, রিপাবলিক অব কঙ্গো, সাউথ আফ্রিকা, থাইল্যান্ড, টোগো, উগান্ডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভিয়েতনাম ও জিম্বাবুয়ে। এর মধ্যে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, লাওস ও মাদাগাস্কারের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বাংলাদেশে বন্যপ্রাণী শিকার ও পাচারের ৩৭৪টি ঘটনায় ৫৬৬ জন অপরাধী ধরা পড়েছে। এর মধ্যে ১০১ জনকে শাস্তি দেয়া হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে মোট ৩৭ হাজার ৫৭৫টি বন্যপ্রাণী, যার মধ্যে ২৬৮টি স্তন্যপায়ী, ১৭ হাজার ৫০১টি পাখি, ১৯ হাজার ৩৫৯টি সরীসৃপ ও ৪৪৭টি বড় জন্তু।

তালিকায় থাকা কিছু দেশ এরই মধ্যে বন্যপ্রাণী পাচার রোধে যত্নশীল হয়ে উঠছে বলেও জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। এসব দেশকে মূল্যায়নের মাধ্যমে মার্কিন দূতাবাসগুলো পরিকল্পনা কৌশল প্রণয়ন করেছে।

বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী পাচারের কেন্দ্র হয়ে ওঠার বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, ‘দুই হাজারের ওপর খাল রয়েছে সুন্দরবনে। এ খাল পাহারা দেবে কে? আমার লোকবল কত রয়েছে? তার পরও আমরা চেষ্টা করছি। এ অপ্রতুল লোকবল দিয়ে যতটুকু সম্ভব আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে।’

 

 

আনন্দবাজার/ইউএসএস

সংবাদটি শেয়ার করুন