ঢাকা | বৃহস্পতিবার
২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খনন চুক্তিতে বাপেক্সের ৩৭ কোটি টাকার অনিয়ম

বাপেক্সের-৩৭-কোটি-টাকার-অনিয়ম

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (বাপেক্স) প্রায় ৩৭ কোটি টাকা আর্থিক অনিয়ম দেখা দিয়েছে। সরকার নির্ধারিত হারের চেয়ে কমে গ্যাস কূপ খনন ও ওয়ার্কওভার কাজে রিগ ও আনুষাঙ্গিক ভাড়ার চুক্তি করার কারণে এই অনিয়ম হয়েছে।

বাপেক্সের ২০১৯-২০ অর্থবছরের চূড়ান্ত নিরীক্ষা প্রতিবেদনে (অডিট ইনস্পেকশন রিপোর্ট-এআইআর) এই গুরুত্বর আর্থিক অনিয়মের বিষয়টি উঠে আসে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর নিরীক্ষা প্রতিবেদন জ্বালানি বিভাগ থেকে বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালের ৫ মে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল)-এর সাতটি কূপে ওয়াকওভার কাজের জন্য চুক্তি করা হয়। তিতাস, হবিগজ্ঞ, নরসিংদী ও বাখরাবাদ গ্যাস ফিল্ডে কূপগুলো অবস্থিত। ভ্যাট ও অগ্রিম আয়কর ছাড়া চুক্তি মূল্য ছিল ১৯৩ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ২০১৭ সালের পরে চুক্তিটি করা হলেও বাপেক্স বোর্ড কর্তৃক পুনঃনির্ধারিত ও জ্বালানি বিভাগ কর্তৃক অনুমোদিত ১০ শতাংশ বর্ধিত হারসহ চুক্তিপত্রটি সম্পাদন করা হয়নি।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মন্ত্রণালয় ও বাপেক্স বোর্ডের সিদ্ধান্ত না মেনে বিজিএফসিএলের করা চুক্তিতে অনিয়মের কারণে মোট ক্ষতি হয়েছে ৩৬ কোটি ৭০ লাখ ৩৬ হাজার ৬০৩ টাকা। এরমধ্যে বাপেক্সের আর্থিক ক্ষতি ৩০ কোটি আট লাখ ৪৯ হাজার ৬৭৫ টাকা। আর ভ্যাট ও অগ্রিম আয়কর বাবদ সরকারের ক্ষতি ছয় কোটি ৬১ লাখ ৮৬ হাজার ৯২৮ টাকা।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে অনিয়ম অভিযোগের জবাবে বাপেক্স থেকে জানানো হয়, রিগ ও আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতির ভাড়া নির্ধারণের আগেই ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) প্রণয়ন করার কারণে নতুন রেটে সমপরিমাণ অর্থ না থাকায় আরডিপিপি (রিভাইস উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) করে অর্থের সংস্থান করে চুক্তি করতে হলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হতো না। এ ছাড়া, বাপেক্স ও বিজিএফসিএল পেট্রোবাংলার অধীনস্ত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান।

জবাবে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রীয় স্বার্থে সঠিক সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং তেল ও গ্যাস সংকট নিরসনে দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের মৌখিক নির্দেশে বাপেক্স এবং বিজিএফসিএলের বাস্তবায়নের জন্য চুক্তি সম্পাদনের পূর্বেই রিগ বিল্ডিং কাজ সম্পন্ন করে ২০১৮ সালের ৭ মে ওয়ার্কওভার কার্যক্রম শুরু হয়। যা একই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। কূপ খনন ও ওর্য়াকওভার কাজে বাপেক্সেও রিগ ও আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতির ভাড়ার নির্ধারিত হারের চেয়ে কমে চুক্তি করা হলেও দুটি পক্ষের কোনো পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ১৪ মার্চ বাপেক্সের ৩৮৫তম বোর্ডসভায় রিগ ও আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতি ভাড়ার হার পুনঃনির্ধারণ করা হয়। বোর্ডসভার সিদ্ধান্ত পর থেকে রিগ ভাড়াসহ ও অন্যান্য চার্জসমূহ প্রতিবছরের শুরুতে ১০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাবে। সিদ্ধান্তটি একই বছরের ৩০ জুলাই মন্ত্রণালয় অনুমোদন দেয়।

আনন্দবাজার/এম.আর

সংবাদটি শেয়ার করুন