ঢাকা | বৃহস্পতিবার
২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনায় দেশে দেশে ই-কমার্স বিপ্লব

করোনায় ই-কমার্স বিপ্লব

বৈশ্বিক টপলিস্টের প্রথমে চীন

চীনের পরেই দক্ষিণ কোরিয়া, গ্রেট ব্রিটেন, ডেনমার্ক, নরওয়ে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

করোনা মহামারি বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল মার্কেট সম্প্রসারণে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।

সামাজিক নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অনলাইনে কেনা-বেচার প্রবণতা দিন দিন ব্যাপক মাত্রা পেয়েছে। প্রযুক্তিপণ্য বিশ্বে বিপ্লব ঘটনো দেশ চীনকে অনুসরণ করে অনলাইন ডিজিটাল বাজারে এগিয়ে চলছে বিশ্বের বহু দেশ। এর মধ্যেই গ্রাহকদের মধ্যে বেড়ে চলেছে প্রযুক্তিগত সচেতনতা। যা বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল বাজার সম্প্রসারণে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ই-কমার্সের বাজার হু হু করে বাড়ছে।

মহামারি করোনা বিশ্বব্যাপী পাল্টে দিয়েছে ব্যবসার ধরন। ডিজিটাল বাজারে বেড়েছে কেনা-বেচা। ঘরে বসেই এখন বিশ্ববাজার ঘুরে পছন্দের জিনিস কিনছেন ক্রেতারা। এ যেন এক অন্যরকম ব্যবসায়িক বিপ্লব। ২০১৯ সালে বিশ্বব্যাপী ই-কমার্স বাজারের আকার ছিল ৯.০৯ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা ২০২৭ সাল পর্যন্ত ১৪.৭ ভাগ চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়বে। মহামারি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপের কারণেই অপ্রত্যাশিতভাবে অনলাইনে কেনা-বেচা বেড়ে গেছে মনে করছে বিশ্লেষকরা।

তারা বলছেন, গ্রাহকদের মধ্যে প্রযুক্তিগত সচেতনতা বাজার বৃদ্ধিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে। সে বার্তাই দিচ্ছে চীনসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ। বৈশ্বিক ই-কমার্সের টপলিস্টে প্রথমে রয়েছে চীন। দেশটির মোট বিক্রির ৫২.১ ভাগ হবে ই-কমার্সে। যা গত বছরের তুলনায় ৭.৩ ভাগ বেশি। এ কারণে অনেকেরই অভিমত, চলতি বছরে ই-কমার্সের বৈশ্বিক ইতিহাসে প্রথম এবং বছরব্যাপী পরাশক্তির ভূমিকায় থাকবে চীন।

ই-মার্কেটারের গবেষণা অনুসারে, ২০২২ সালে দেশটিতে অনলাইন বিক্রি বাড়বে ১১ ভাগ। মোট খুচরা বিক্রি ৫৫.৬ ভাগে পৌঁছাবে। টাকার অঙ্কে এ সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে ৩ ট্রিলিয়ন ডলারে। স্পষ্টতই, করোনা দেশটিতে ডিজিটাল মার্কেট সম্প্রসারণে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। যদিও করোনার উৎস দেশটি মহামারির আগেও ডিজিটাল বিক্রিতে শক্তিশালী ছিল। চীনা নাগরিকদের অনলাইন শপিংয়ের একটি দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে। বর্তমানে সামাজিক নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কেনা-বেচার প্রবণতা ব্যাপক হয়ে উঠেছে। চীনকে অনুসরণ করে অনলাইন ডিজিটাল বাজারে এগিয়ে চলছে দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটির খুচরা বিক্রির আনুমানিক পরিমাণ ১২০ বিলিয়ন ডলার। যার ২৮.৩ ভাগ হবে ই-কমার্সে। ২০২২ সালে এই শতাংশ ৩১.৬ ভাগ বাড়বে।

অনলাইন বিক্রয়ের সর্বোচ্চ শতাংশের সঙ্গে বিশ্বের তৃতীয় দেশ হল গ্রেট ব্রিটেন। দেশটির মোট বিক্রির ২৮.৩ ভাগ হবে ডিজিটাল মার্কেটে। ই-মার্কেটের গবেষণা অনুসারে ২০২২ সালে এই শতাংশের সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে ২৮.৫ ভাগ হবে।

গ্রেট ব্রিটেনের পরেই রয়েছে ডেনমার্ক। যেখানে চলতি বছরে মোট খুচরা বিক্রির ১৯.১ ভাগ অনলাইনে। এরপরের দেশ হিসেবে রয়েছে নরওয়ে। দেশটিতে চলতি বছরে মোট খুচরা বিক্রির ১৭.৬ ভাগ হচ্ছে অনলাইনে। তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। চলতি বছরে ৬.১ ভাগ বাড়ার সঙ্গে খুচরা ই-কমার্স বিক্রি ছাড়াবে ৮০০ বিলিয়ন ডলার। পাশাপাশি অনলাইনে বিক্রি দাঁড়াবে মোট বিক্রির ১৫ ভাগ। যা ২০২২ সালে উন্নিত হবে ১৬.৩ ভাগে।

বিশ্বের যে দশটি দেশের ডিজিটাল চ্যানেল বেশি শক্তিশালী সেই তালিকায় ইউরোপের আরও চারটি দেশ রয়েছে। এর মধ্যে এ বছর ফিনল্যান্ডে মোট বিক্রির ১৪.৩ ভাগ, সুইডেন ১৩.২ ভাগ, ফ্রান্স ১১.২ ভাগ এবং স্পেনে ১০.২ ভাগ বিক্রি হবে অনলাইনে। এছাড়া যুক্তরাজ্যে খুচরা ই-কমার্স বিক্রিতে ১৬৯ বিলিয়ন ডলার, জাপানে ১৪৪ বিলিয়ন ডলার, জার্মানিতে ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। পাশাপাশি ফ্রান্স ৮০ বিলিয়ন ডলারে, ভারতে ৬৮ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে কিছুটা কম, কানাডা, ৪৪ বিলিয়ন ডলারে এবং স্পেন পৌঁছাবে ৩৭ বিলিয়ন ডলারে।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন