ঢাকা | রবিবার
২৬শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১২ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাউথইস্ট ব্যাংকে কেলেঙ্কারি, ক্ষুদ্ধ আমানতকারীরা

সাউথইস্ট ব্যাংকে কেলেঙ্কারি, ক্ষুদ্ধ আমানতকারীরা

দুদকে অভিযোগ

সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলমগীর কবিরের নিয়োগ, ঋণ ও সুদ মওকুফ বাণিজ্যসহ অফশোর ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৪৮৩ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করেছে আমানতকারীরা। একইসঙ্গে তার দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা। সোমবার (১৫ নভেম্বর) সকালে ‘সাধারণ আমানতকারীগণ’র ব্যানারে মানববন্ধন পালন করেন আমানতকারীরা।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, সম্প্রতি ব্যাংকের নওগাঁ শাখার এক গ্রাহক ১১ কোটি টাকা নিয়ে বিদেশে পালিয়েছেন। এছাড়া ব্যাংকে স্বাভাবিকের চেয়ে চড়া দামে নিম্নমানের ক্যাশ রিসাইক্লিংয়ের ঘটনাও ঘটেছে।

অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে, ব্যাংকটির চেয়ারম্যান আলমগীর কবির অফসোর ব্যাংকিং ইউনিটের মাধ্যমে ৪৮৩ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করার বিষয়টি প্রকাশ হওয়ায় তৎকালীন এমডি সহিদ হোসেনকে পদত্যাগে বাধ্য করান। গত তিন বছরে এক হাজার ৮৪৭ কোটি টাকা সুদ মওকুফ করে খেলাপি গ্রাহক থেকে ৮০৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। নিয়ম অনুযায়ী সুদ মওকুফ প্রস্তাব উপস্থাপন না হওয়ায় স্বাক্ষর করার জন্য চাপ প্রয়োগ করলে অসম্মতি প্রদান করায় ব্যাংকটির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিবুর রহমানকে পদত্যাগে বাধ্য করেন চেয়ারম্যান।

স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) চেয়ারমান আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করলেও অদৃশ্য কারণে তদন্ত বন্ধ হয়। দেশের ব্যাংকিং সেক্টরের এমন দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় আনতে স্বাধীন তদন্তকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুদকের মাধ্যমে গভীর তদন্ত করা দরকার।

এতে আরও বলা হয়, আলমগীর কবির ১৭ বছর অবৈধভাবে চেয়ারম্যান পদ দখল করে ব্যাংক থেকে নামে ও বেনামে বিদেশে কয়েকশ কোটি টাকা পাচার করেছেন। তিনি যে কোনো সময় দেশ ত্যাগ করতে পারেন। জরুরি ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে দেশ ত্যাগের নিষেধাজ্ঞা ও একজন দক্ষ, সৎ কর্মকর্তাকে দিয়ে অনুগ্রহপূর্বক জরুরি ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দাবি জানান আমানতকারীরা।

মানববন্ধনে আমানতকারী মো. আজিজুর রহমান আজাদ বলেন, সম্প্রতি সাউথইস্ট ব্যাংকে মাত্রা চরমভাবে অনিয়ম হচ্ছে। ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান আলমগীর কবিরের স্বেচ্ছাচারিতা, হরিলুট, জালিয়াতি, ব্যাপক দুর্নীতি এবং বিপুল পরিমাণ অর্থপাচারের মাধ্যমে ব্যাংকের দীর্ঘদিনের সাফল্য ধ্বংস হতে চলেছে। অন্যদিকে চরম শঙ্কায় পড়েছেন দেশের হাজার হাজার গ্রাহকের আমানত।

এর আগে গত ১৭ আগস্ট সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে তিন মাসের মধ্যে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিলো। জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন