রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চার ব্যাংকের ঋণখেলাপি বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দ্রুত খেলাপি কমিয়ে আনার নির্দেশনা দিয়েছে অভিভাবক ব্যাংক। পাশাপাশি অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনা এড়াতে যাচাই-বাছাই করে ঋণ বিতরণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১১ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় ব্যাংক কার্যালয়ে ‘রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সমঝোতা স্মারক’র অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচানা সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এই পরামর্শ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর, চার ব্যাংকের এমডি, নির্বাহী পরিচালক, পর্যবেক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের মধ্যে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি খেলাপিঋণ জনতা ব্যাংকের। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, জুন শেষে জনতা ব্যাংকের খেলাপিঋণের পরিমাণ ১৩ হাজার ৯৯৩ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২৩ দশমিক ৫২ শতাংশ। সোনালী ব্যাংকের খেলাপিঋণ ১০ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংকের সাত হাজার ৩০৫ কোটি টাকা এবং রূপালী ব্যাংকের খেলাপিঋণের পরিমাণ তিন হাজার ৭৫৪ কোটি টাকা। সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপিঋণের ১০ শতাংশের নিচে নেমে আসার চুক্তি থাকলেও এখন এ হার ২০ দশমিক ৬২ শতাংশ।
সভায় উপস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের এক দায়িয়ত্বশীল কর্মকর্তা জানান, বছরের পর বছর মাত্রাতিরিক্ত খেলাপিঋণ, মূলধন ও প্রভিশন ঘাটতি কমাতেও নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি সরকারঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজগুলো যথানিয়মে এবং দ্রুততার সঙ্গে শতভাগ বাস্তবায়নের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। আবার কিছু এলাকায় নির্দিষ্ট কিছু মানুষের মাঝে ঋণ বিতরণ করছে ব্যাংকগুলো। এতে কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়ছে ব্যাংকঋণ। এতে ঋণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত অন এলাকার নতুন উদ্যোক্তারা। এ ধারাবাহিকতা থেকে বেরিয়ে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সভায় উপস্থিত অপর এক কর্মকর্তা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বড় শহরকেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠানকে ঋণ প্রদানে ব্যাংক যত বেশি আগ্রহী, আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি তত আগ্রহী না। এ থেকে বেরিয়ে আসার সঙ্গে অঞ্চলনির্বিশেষে কুটির, ক্ষুদ্র, মাঝারি উদ্যোক্তাদের অর্থায়ন করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
আনন্দবাজার/শহক