লকডাউনে দুধের দাম কমলেও পশুখাদ্যের দাম হঠাৎ বৃদ্ধিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ডেইরি খাতের উদ্যোক্তারা। কারখানা ও গুদামে পর্যাপ্ত মজুদ থাকার পরও খাদ্য উৎপাদনকারী ও আমদানিকারকরা কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে পশুখাদ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ খামারিদের।
তবে ব্যবসায়ীরা বলছে দেশীয় ও আর্ন্তজাতিক বাজারে পশুখাদ্যের কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি ও লকডাউনের কারণে আর্ন্তজাতিক বাজার থেকে কাঁচামাল আমদানি ব্যাহত হওয়ায় পশুখাদ্যের দামও কিছুটা বেড়েছে।
জানা যায়, বর্তমানে বাজারে প্রতিবস্তা (৩৫ কেজি) ভালো মানের গমের মোটা ভুষি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫০ টাকা দরে। দুই সপ্তাহ আগে একই মানের ভুষি বিক্রি হত ১১৫০ টাকার। অর্থাৎ দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পণ্যটির দাম প্রতিবস্তায় ২০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এছাড়া, দুই সপ্তাহ আগে বাজারে মাঝারি মানের প্রতিবস্তা গমের মোটা ভুষি বিক্রি হত ১০৩০ টাকা দরে। বস্তায় ১০০ টাকা বেড়ে বর্তমানে একই মানের ভুষি ১১৩০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) গমের ভুষি বিক্রি হয়েছে ১১০০ টাকায়। যা এখন বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা দরে।
খামারিরা জানান, বর্তমানে বাজারে প্রতিবস্তা (৩০ কেজি) মসুরের ভুষি বিক্রি হচ্ছে ৮২০ টাকায়। যা মার্চের শেষ দিকে বিক্রি হত ৭২০ টাকার মধ্যে। আগে প্রতিবস্তা (৪০ কেজি) মুগডালের ভুষি ১১০০ টাকায় বিক্রি হতো। বস্তাপ্রতি ৮০ বেড়ে বাজারে এখন মুগডালের বিক্রি হচ্ছে ১১৮০ টাকায়। মার্চের শেষ দিকে প্রতিবস্তা (৫০ কেজি) সয়াবিনের ভুষি (খোসা) ২৩০০ টাকায় পাওয়া গেলেও বর্তমানে তা কিনতে হচ্ছে ২৩৮০ টাকা দরে। সেই হিসেবে, দুই সপ্তাহেই প্রতিবস্তা সয়াবিনের খোসার দাম বেড়েছে ৮০ পর্যন্ত।
এদিকে বস্তাপ্রতি (৪৮ কেজি ) ১০০ বেড়ে বর্তমানে ভুট্টা ভাঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ১০৫০ টাকা, মটরের খোসা বস্তাপ্রতি (১৮ কেজি) ১০০ বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা ও চিড়ার গুড়া প্রতি বস্তায় (৪০ কেজি) ৫০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা ও শুকনা কড় (কেজিপ্রতি) ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮ টাকা দরে। মার্চের শেষ দিকে এসব পণ্যের মধ্যে ভুট্টা ভাঙ্গা ১০০০ টাকা, মটরের খোসা ৫০০ টাকা, চিড়ার গুড়া ৭০০ টাকা, ও শুকনা কড় ৬ টাকা দরে বিক্রি হতো।
ডেইরি ফার্মের উদ্যোক্তরা জানান, খাদ্যের পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় পশু ওষুধের দামও অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। তাদের মতে, বর্তমানে বাজারে প্রতি প্যাকেট (৫ কেজি) ডিসিপি পাউডার (হাড়ের গুড়া) বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা দামে। যা দুই সপ্তাহ আগে ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
দুই সপ্তাহ আগে প্রতিকেজি মিনারেল পাউডার বিক্রি হতো ২৮০ টাকার মধ্যে। কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে এখন মিনারেল পাউডার বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা দামে।
বর্তমানে প্রতি প্যাকেট (৫ কেজি) তরল ক্যালসিয়াম বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকা দামে। যা দুই সপ্তাহ আগে ৯৫০-১০০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে। একইভাবে ক্যালসিয়ামের প্রতিটি ইনজেকশনের দামও ৪০ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই সপ্তাহ আগে বাজারে প্রতিটি ক্যালসিয়াম ইনজেকশন বিক্রি হতো ৪৮০ টাকা দামে। যা এখন ৫২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
আনন্দবাজার/শহক