ঢাকা | শুক্রবার
১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমনের বাম্পার ফলন, ন্যায্য দামের শঙ্কায় কৃষক

চালের বাজারে দাম বাড়লেও আশার বাণী নিয়ে আসছে আমন। গতবারের মতো এবারো আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। চালের বাজারের এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে এমনটাই জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন জেলায় আমন ধান কাটা শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু যারা দেশের খাদ্যের অভাব মিটাচ্ছেন সেই কৃষকের মুখেই হাসি নেই।

আমনের বাম্পার ফলন হলেও ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে সংশয়ে আছেন কৃষক। তারা জানান, প্রতি মণ ধান উৎপাদনে খরচ হয় ৭৫০-৮০০ টাকা । কিন্তু হাট-বাজারে প্রতি মণ ধানের সর্বচ্চো বিক্রয়মূল্য ৬০০ থেকে ৬৭৫ টাকা। যার ফলে প্রতি মণে লোকসান হবে ১৫০-২০০ টাকা। এই হিসাব অনুযায়ী প্রতিবিঘায় গড়ে ২৫ মণ ধান উৎপাদন হলে লোকসান গুনতে হবে ৪ হাজার টাকা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে ৫৮ লাখ ৭৯ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সে হিসাবে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক কোটি ৫৩ লাখ ৫৭ হাজার টন। যদিও কৃষি অধিদফতরের তথ্যমতে এই উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আরও বেশি হবে। তবে সব জেলায় ধান কাটা শেষ হলেই আসল চিত্র তুলে ধরা যাবে।

দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ভান্ডারা গ্রামের কৃষক সুপ্রিয় লাল জানান, এক বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করতে জমির অন্যান্য খরচসহ মোট খরচ হয়েছে ২০ হাজার থেকে ২১ হাজার টাকা। বিঘাপ্রতি জমিতে ২৫ মণ ধান উৎপাদন হয়। প্রতি মণ ধান উৎপাদনে ৭৫০-৮০০ টাকা খরচ হলেও বাজারে সেই ধানের বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করা আছে ৬০০ থেকে ৬৭৫ টাকা। এতে এক বিঘা জমির ধান বাজারে বিক্রি করলে উৎপাদন খরচ তো উঠবেই না বরং লোকসান গুনতে হবে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা।

তিনি আরও জানান, ‘ধানচাষ করে এখন আর লাভ হচ্ছে না। বাম্পার ফলনের পরও টানাটানির মধ্যেই থাকতে হচ্ছে। ধারদেনা নিয়ে ধান উৎপাদন করে ঋণের টাকাও শোধ করতে পারছি না।’

এদিকে দেশে আমন উৎপাদনের শীর্ষ জেলা হচ্ছে রাজশাহী, বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও দিনাজপুর। বরাবরের মতো উঁচু-নিচু লালমাটির এ পাঁচ জেলায় এবারও আমনের ভালো ফলন হয়েছে। জেলার বিস্তীর্ণ আমন খেতে এখন সোনালি ধানের সমারোহ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক হান্নান মিয়া জানান, আমন কাটাই-মাড়াই শুরুর পর অটো রাইস মিল মালিকরাই ধানের দাম নিয়ন্ত্রণ করেন। তারা ধানের ন্যায্য দাম কমানোর জন্য ধান ওঠার পর সিন্ডিকেট করে দুই সপ্তাহ কোনো ধান কেনেন না। ঠিক দাম যখন পড়ে যায় তখন তারা ধান কিনে গুদাম ভরে রাখেন।

সরকার ঘোষণা দিয়েছেন এবার সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ৬ লাখ মেট্রিক টন ধান কিনবে।

আনন্দবাজার/শাহী

সংবাদটি শেয়ার করুন