ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্বে সর্বোচ্চ মূল্যে স্ক্র্যাপ জাহাজ কিনছে বাংলাদেশ

স্ক্র্যাপ জাহাজ কেনার ক্ষেত্রে বর্তমানে বিশ্বে সর্বোচ্চ দাম দিচ্ছে বাংলাদেশ। গত নভেম্বর থেকে দেশের স্থানীয় বাজারে স্ক্র্যাপের চাহিদা বাড়ায় আমদানিকারকরা বেশি দামে স্ক্র‌্যাপ ক্রয় করছেন।

জাহাজভাঙা শিল্পের সাথে জড়িতরা বলছেন, তাদের বেশি দাম দিয়ে পুরোনো স্ক্র্যাপ জাহাজ কিনতে হচ্ছে স্থানীয় বাজারে ইস্পাত খাতে কাঁচামাল হিসেবে স্ক্র্যাপের বিপুল চাহিদা মেটাতে। ফলে স্ক্র্যাপ জাহাজ ক্রেতার তালিকায় বাংলাদেশ বর্তমানে শীর্ষেস্থানে রয়েছে।

গত ৩০ নভেম্বর প্রকাশিত জিএমএস এর সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, বিশ্বের পুরনো জাহাজের সর্ববৃহৎ ক্রেতা হিসেবে বাংলাদেশ বর্তমানে কন্টেইনারবাহী জাহাজগুলো প্রতি এলডিটি (টনপ্রতি) ৪০০ ডলার, তেলবাহী ট্যাংকার ৩৯০ ডলার এবং খোলা পণ্যবাহী জাহাজের ক্ষেত্রে ৩৮০ ডলার দাম দিচ্ছে।

গত জুন মাসে এই দাম ছিল প্রতি এলডিটি কন্টেইনারবাহী জাহাজের জন্য ৩১০ ডলার, তেলবাহী ট্যাংকারে ৩০০ ডলার এবং খোলা পণ্যবাহী জাহাজের জন্য ২৯০ ডলার।

এদিকে বর্তমানে ভারতে কন্টেইনারবাহী পুরনো জাহাজের দাম প্রতি এলডিটি ৩৬০ ডলার , তেলবাহী জাহাজ ৩৭০ ডলার ও খোলা পণ্যবাহী (বাল্ক ক্যারিয়ার) জাহাজ ৩৬০ ডলার। পাকিস্তানে কন্টেইনারবাহী পুরনো জাহাজ প্রতি এলডিটি ৩৯০ ডলার, তেলবাহী জাহাজ প্রতি এলডিটি ৩৮৯ ও খোলা পণ্যবাহী জাহাজের দাম ৩৭০ ডলার। এছাড়া তুরস্কে কন্টেইনারবাহী পুরনো জাহাজ প্রতি এলডিটি ২৪০, তেলবাহী প্রতি এলডিটি ২৩০ এবং খোলা পণ্যবাহী (বাল্ক ক্যারিয়ার) জাহাজের দাম ২২০ ডলার।

বিশ্বে জাহাজ রিসাইক্লিং করার শতকরা ৯৫ ভাগ সুবিধা বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত চীন ও তুরস্কে রয়েছে। তবে এর মধ্যে ২০১৯ সাল থেকে রিসাইক্লিং করার জন্য জাহাজ আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে চীন।

বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ইস্পাত নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কেএসআরএমের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত বলেন, করোনা মহামারীর কারণে সমস্ত শিপব্রেকিং ইয়ার্ড স্ক্র্যাপ জাহাজ শূন্য। বর্তমানে দেশে নির্মাণ শিল্পের ভরা মৌসুম চলছে। ফলে স্থানীয় বাজারে ইস্পাতের চাহিদাও ব্যাপক।

জিএমএসের সর্বশেষ বুলেটিন অনুসারে, ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশকে যদি বাংলাদেশের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হয়, তবে এ বছরের শেষে ও আগামী বছরের শুরুর দিকে তাদের দাম সমন্বয় করতে হবে।

সীতাকুন্ডে রিসাইক্লিং জাহাজ আমদানীকারক গোল্ডেন আয়রনের পরিচালক মোহাম্মদ সরোয়ার আলম বলেন, বুধবার বিশ্ববাজারে স্ক্র্যাপের দাম টনপ্রতি ছিল ৪৩০-৪৫০ ডলার এবং স্ক্র্যাপ জাহাজের দাম ছিল টনপ্রতি প্রায় ৪০০ ডলার। মহামারীর কারণে দেশজুড়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিল। তবে এখন অনেক নির্মাণ কাজ চলছে। তাই স্থানীয় বাজারে ইস্পাতের ভালো চাহিদা রয়েছে। তবে শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড ও আন্তর্জাতিক স্ক্র্যাপের বাজারে উভয়ের সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে।

নির্মাতারা অবশ্য ইস্পাতের দাম বাড়ার কারণ হিসাবে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বাজারে রড উৎপাদনের কাঁচামালের বর্ধিত মূল্যের কথা উল্লেখ করেছেন।

আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস

সংবাদটি শেয়ার করুন