অর্থ সংকট মেটাতে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের (বিএসএফআইসি) অধীন চিনিকলগুলো বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে বড় অংকের ঋণ নিয়ে থাকে। শুধু আখচাষীদের ঋণ দেয়ার উদ্দেশ্যেই রাষ্ট্রায়ত্ত তিন বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ২ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে মিলগুলো। বিতরণের পর কৃষকদের কাছ থেকে সেই ঋণের প্রায় শতভাগ আদায়ও করা হয়েছে। কিন্তু আদায়কৃত এ অর্থ ব্যাংকে ফেরত দেয়নি মিলগুলো। ফলে সুদে-আসলে সেই ব্যাংকঋণের পরিমাণ এখন ৩ হাজার ২৪৭ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকেছে।
বিএসএফআইসি সূত্রে জানা গেছে, চিনিকলগুলোর নেয়া কৃষিঋণের মধ্যে ২০১৫-১৯ সাল পর্যন্ত সময়ে সোনালী ব্যাংক থেকে নেয়া মোট ঋণের পরিমাণ ২ হাজার ৯০ হাজার কোটি টাকা। এটি এখন সুদসহ ২ হাজার ৪৭৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকার দায়ে পরিণত হয়েছে। কৃষককে দেয়ার উদ্দেশ্যে একই সময়ে জনতা ব্যাংক থেকে ৬৬০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে চিনিকলগুলো। এখন সুদসহ এ ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৫৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
অন্যদিকে ২০০৫-০৮ সময়ে কৃষি ব্যাংক থেকে ৫ কোটি টাকার ঋণ এখন সুদাসলে ১০ কোটি ২ লাখ টাকার দায়ে পরিণত হয়েছে।
এ বিষয়ে জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই করপোরেশনে বড় অংকের অর্থ আটকে আছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও কর্তৃপক্ষকে প্রতিনিয়ত চিঠি প্রদান ও আদায়ের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আমাদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। যদিও সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে জামানত রয়েছে। তবে অর্থগুলো আবর্তন হচ্ছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আখচাষীদের কাছ থেকে আদায় করা ঋণের অর্থ ব্যাংককে ফেরত না দিয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ভাতা ও লোকসান মেটাতে ব্যয় করেছে চিনিকলগুলো। অর্থের এমন নয়-ছয়ের কারণে অর্থ মন্ত্রণালয় আর নতুন কোনো ঋণ সুপারিশ বা ভর্তুকি প্রদান করতে আগ্রহী হচ্ছে না। এরই ফলশ্রুতিতে সব ধরনের উপকরণ সহায়তা ও ঋণ সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা।
সূত্র: বণিক বার্তা
আনন্দবাজার/ইউএসএস