ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসায় কার্যকর ওষুধ আবিষ্কার করেছে বাংলাদেশি গবেষকরা। এর মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগীর জীবন রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন গবেষকরা। প্রায় ২ বছরের গবেষণায় পাওয়া গেছে ‘এ্যালট্রম্বোপ্যাগ’ নামে একটি জেনেরিক ওষুধ।
তবে তৃতীয় ট্রায়ালের আগে এখনই এই ওষুধ ব্যবহার না করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে চিকিৎসকদের।
ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসায় কার্যকর ওষুধের বিষয়ে বাংলাদেশি বিজ্ঞানীরা জানান, ‘এ্যালট্রম্বোপ্যাগ’ নামে জেনেরিক ওষুধটি এতদিন রক্তের ইমিউথ্রম্বোসাইটোপেনিয়া ক্রনিক লিভার রোগ নিরাময়ে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু একই ওষুধ ডেঙ্গুর ফলে সৃষ্ট রক্তক্ষরণ বন্ধেও কাজ করে যার প্রমাণ তারা পেয়েছেন।
গত বছর ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বৃদ্ধি পেতে থাকলে মৌসুমি স্যানাল নামে এক চিকিৎসক কয়েকজন রোগীকে ওষুধটি দিয়ে ব্যাপক সফলতা পান। এটি দেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিভাগের অধ্যাপক এ এইচ এম নুরুন নবী ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডাক্তার আহমেদুল কবিরের নেতৃত্বে ১২ জনের একটি গবেষক দল এর ওপর গবেষণা শুরু করেন। ১ম ধাপে সফলতার পর দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়ালেও ‘এ্যালট্রম্বোপ্যাগে’র কার্যকারিতা পান তারা।
ডিএমসির অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির জানান, রোগীদেরকে গ্রুপ-১ ও গ্রুপ-২ দেয়ার পর খুব আশাবাদী রেজাল্ট পাওয়া যায়। এটি দেওয়ার পর রোগী ৭ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যাচ্ছে। আর এটির সাইটএফেক্ট খুব কম। ওষুধের মূল্যও ৩০০ টাকা, তিনটির দাম ৯০০ টাকা পড়বে এর চেয়ে বেশি খরচ হবে না।
তবে বাংলাদেশেও বিশ্ব মানের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্ভব বলে মনে করেন গবেষক দলের প্রধান ডক্টর নুরুন নবী। বিশ্বখ্যাত চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেট-এর জার্নাল ‘ই- ক্লিনিক্যাল মেডিসিনে’ প্রকাশিত তাদের নিবন্ধটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও অনেক সাড়া ফেলবে বলে মনে করেন তিনি।
১০১ জন রোগীর ওপর চালানো পরীক্ষায় তিন শতাংশের ক্ষেত্রে বমি এবং চার শতাংশের ডায়রিয়া হলেও বাকিরা ছিলেন পুরোপুরি নিরাপদ। আগামী বছরের শেষে বিস্তৃত পরিসরে ৩য় ধাপের ট্রায়ালের পর ওষুধটির বিষয়টি চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসার কথা জানালেন তারা।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে