ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগগুলো জাতীয় অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। এটি ব্যবসায় গতি সঞ্চারের পাশাপাশি ভালো সংখ্যক কর্মসংস্থান ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছে। এ উন্নয়ন আরো ত্বরান্বিত করার ব্যাপক সুযোগ থাকা সত্ত্বেও এসএমইগুলো এখন আমাদের দেশে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।
এ অবস্থায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতকে এগিয়ে নিতে সরকারের অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচিত ইকোনমিক জোনে সহজ শর্তে জমি বরাদ্দের সুযোগ পেতে চান উদ্যোক্তারা। এজন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরীতে ৫০০ একর জমি বরাদ্দ পেতে লিখিতভাবে অনুরোধ জানিয়েছে চট্টগ্রাম চেম্বার।
ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের প্রতি দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবেই বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের শিল্প ও এসএমই খাতের উন্নতি ও বিকাশের জন্য নতুন ধারণা ও আরো উৎসাহ নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমরা চট্টগ্রামকে এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় অর্থনৈতিক গন্তব্য হিসেবে রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ সেন্টার অব এক্সিলেন্স’ নামে একটি নতুন প্রকল্প শুরু করেছি। চিঠিতে চট্টগ্রামে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ ও ঐতিহ্যবাহী সংগঠনটির পক্ষ হতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগগুলোকে এগিয়ে নিতে ৫০০ একর জমি বরাদ্দের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) তথ্যানুযায়ী, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল হতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর। এখানকার শিল্প-কারখানায় বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্বমানের সব সুযোগ-সুবিধা নিয়ে ফেনীর সোনাগাজী ও চট্টগ্রামের মীরসরাই, সীতাকুণ্ড উপজেলা নিয়ে স্থাপিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাই থেকে ১০ কিলোমিটার ও বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে স্থাপিত এ শিল্পনগরে বিনিয়োগকারীদের জন্য সমুদ্রবন্দর, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, কেন্দ্রীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পানি শোধনাগার, আবাসিক এলাকা, বাণিজ্যিক এলাকা, বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতাল স্থাপন করা হচ্ছে। শিল্পনগরীর জন্য প্রস্তাবিত ৩১ হাজার একর জমিতে ১২৩ বিনিয়োগকারীকে ১ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ অনুমোদনও করা হয়েছে। এ শিল্পনগরে ২৬টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান উৎপাদন শুরুর প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এছাড়া ৩৭টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান নির্মাণাধীন।
অন্যদিকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তারা বলছেন, বিসিক শিল্পনগরী হলেও আছে শুধু বিভিন্ন সমস্যা এবং অব্যবস্থাপনা। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করলেও প্রত্যাশিত সেবা মেলে না। ভূমি অধিগ্রহণ, অবকাঠামো নির্মাণ, বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন ও সড়কের অব্যবস্থাপনাসহ প্রায় সবক্ষেত্রেই ভোগান্তি রয়েছে।
সূত্র: বণিক বার্তা
আনন্দবাজার/ইউএসএস