ঢাকা | শনিবার
১৪ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
৩১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বদলে যাচ্ছে দেশের পুলিশ বাহিনী

বাংলাদেশে লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে পুলিশের চাকরি পেতে হয়। আর চাকরিতে পাওয়ার পরেই ওই টাকা তুলতে পুলিশের সদস্যরা। কিন্তু বর্তমানে সেই ধারণা পাল্টে বদলে যাচ্ছে দেশের পুলিশ বাহিনী। সেই সাথে পুলিশকে জনগণের সেবায় কাজে লাগাতে সংস্কারের কাজ চলছে।

এমনকি পুলিশে চাকরি করেও অনেকে মাদকের সাথে জড়িয়েছেন। তাই বর্তমানে এমন সদস্যদের প্রথমে সতর্ক এবং পরে চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। আর এভাবে সংস্কারের অংশ হিসেবে পুলিশ বাহিনীকে দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত করার পদক্ষেপ ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে।

এসব পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে—রাজধানীর থানাগুলোতে কোনো বাদী মামলা করতে গিয়ে থানায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন কি না, ঘুষ দিতে হচ্ছে কি না, এ জন্য ডিএমপি সদর দপ্তরে আলাদা একটি সেল খোলা হয়েছে। এ ছাড়া রাস্তায় পুলিশ যাতে কাউকে লাঠিপেটা এবং বুট দিয়ে আঘাত না করে সে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ডোপ টেস্টের মাধ্যমে মাদকাসক্ত পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি মাদক কারবারের সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানান, পুলিশ রিফর্মের কাজ বর্তমানে চলমান প্রক্রিয়া। সততা, নিষ্ঠার সাথে পুলিশ যাতে কাজ করে সে জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম জানান, পুলিশকে অবশ্যই সৎ থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। থানায় পুলিশ মানুষের সাথে কি ধরনের আচরণ করছে সে বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে। রাজধানীর যে কেউ আমাদের কাছে ফোন করতে পারেন। প্রতিটি থানার সামনে ডিসি-এডিসিদের ফোন নম্বর দেওয়া আছে। থানায় গিয়ে কোনো ধরনের সমস্যায় পড়লে ভয় না পেয়ে তাদের ফোন করে দেখুন সহযোগিতা পান কি না?

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ডিএমপি সদর দপ্তরে ডিএমপি সেল খোলা হয়। ওই সেলে প্রতিদিন রাজধানীর ৫০টি থানায় দায়ের হওয়া মামলা এবং গুরুত্বপূর্ণ জিডির কপিও আসে সেখানে। সেল থেকে মামলা ও জিডির বাদীকে ফোন করে ১০টি ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়। এগুলোর মধ্যে আছে থানায় পুলিশের হয়রানির শিকার হয়েছেন কি না, কোনো পুলিশ ঘুষ চাচ্ছে কি না, থানায় গিয়ে অভিযোগ দিতে কোনো সমস্যায় পড়েছেন কি না, অনেক সময় ধরে বসে থাকতে হয়েছে কি না, তদন্ত শুরু হয়েছে কি না, পুলিশ অভিযোগ অবহেলা করছে কি না ইত্যাদি।

রাজধানীর একটি থানার ওসি নাম প্রকাশ না করে জানান, ইতোমধ্যে সেল থেকে খোঁজ-খবর নেওয়ার কারণে সবার মধ্যেই একটা আলাদা ভীতি কাজ করছে। এতে মামলার বাদী যেমন উপকৃত হচ্ছেন, তেমনি যে পুলিশ সদস্য মামলাটি তদন্ত করছেন তিনিও আন্তরিকতার সাথেই করছেন। ফলে তদন্তের মানও আগের চেয়ে অনেক ভালো হচ্ছে।

আনন্দবাজার/এইচ এস কে

সংবাদটি শেয়ার করুন