মঙ্গলবার, ১০ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিভক্তি নয়, বিজয়ী ভাষণে বাইডেনের ঐক্যের ডাক

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো জাতির উদ্দেশে বিজয়ী ভাষণে বক্তব্য রাখলেন ডেমোক্র্যাট নেতা জো বাইডেন। এই সময় বক্তব্য রাখেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। বিভক্তি নয়, ভাষণে থেকে আসে ঐক্যর ডাক। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ভাষণ শুনতে জড়ো হন হাজারো মানুষ।

বিজয়ী ভাষণে বাইডেন আমেরিকার জনগণকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, ‘আমেরিকার মানুষ জবাব দিয়েছে। তারা আমাদের পরিষ্কার বিজয় এনে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি (৭ কোটি ৪০ লাখ) ভোট পেয়ে আমরা জয়ী হয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আজ রাতে, পুরো বিশ্ব আমেরিকাকে দেখছে। আমি বিশ্বাস করি আমাদের শ্রেষ্ঠ আমেরিকা বিশ্বজগতের জন্য একটি বাতিঘর।

ভাষণে বাইডেন জোর দিয়ে বলেন, আমরা খুবই আনন্দিত। আপনারা আমাদের উপর আস্থা রেখেছেন। কমলা হ্যারিসকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ দিয়েছে।কৃষ্ণাঙ্গদের ভোট দলের গতি এনে দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, ‘আফ্রিকান আমেরিকান সম্প্রদায় আমার পক্ষে দাঁড়িয়েছিল। আপনার সবসময় আমার পাশে ছিলেন, আমিও সবসময় আপনাদেরই থাকবো।

বর্তমানে আমেরিকায় রাজনৈতিক বা পারস্পারিক বিভাজনের বিষয়টি স্বীকার করে নবনির্বাচিত এই প্রেসিডন্ট বলেন, এখনই সময় এই দূরত্ব, সংশয় এবং বাকবিতণ্ডা ঠেলে দিয়ে আমাদের এক হওয়ার। একে অপরকে আবার দেখা, একে অপরের কথা শোনার এখনই সময়। বিরোধীদের শত্রু ভাবা বন্ধ করতে হবে। তারা কারো শত্রু নয়, তারা আমেরিকান।

বৈশ্বিক মহামারির ইস্যুও ছিল বাইডেনের ভাষণে। বলেন, আমরা প্রস্তুত এই মহামারি মোকাবিলায় কাজ করতে। এই মহামারি মোকাবিলায় কোন কিছুতেই ছাড় দেয়া হবে না। সোমবার (৯ নভেম্বর) বাইডেন একটি টাস্কফোর্স এবং মহামারি মোকাবিলার পরিকল্পনা ঘোষণা করবেন বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুনঃ  ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই : প্রধানমন্ত্রী

আমেরিকাকে বিশ্বের দরবারে ফের সম্মানজনক জায়গায় নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর বলেও নিজের ভাষণে জানিয়েছেন বাইডেন। এই নির্বাচনে তাকে সমর্থন জানানোর জন্য দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পাশাপাশি আম জনতাকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।

যুদ্ধের প্রসঙ্গে বলেন, ‘যুদ্ধ বন্ধ করার এটাই মোক্ষম সময়। আমেরিকার ক্ষত সারানোরও সেরা সময়। আমি এমন একজন রাষ্ট্রপতি হওয়ার অঙ্গীকার করছি, যিনি বিভাজন না করে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে চান। যিনি লাল ও নীল রাজ্য দেখেন না, কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দেখেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‌’এই জাতির ইতিহাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আমরা সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছি – সাত কোটি ৪০ লাখ ভোট। আমার ওপর আপনাদের এই আস্থা ও বিশ্বাসের জন্য আমি কৃতজ্ঞ।

নিজের বর্তমান অবস্থানের জন্য স্ত্রী, সন্তান ও নাতি-নাতনিসহ পরিবারের সদস্যদের অবদানের কথাও স্মরণ করেন জো বাইডেন। পরিবারের সবার ভালোবাসা ও অক্লান্ত সমর্থন ছাড়া তার পক্ষে এই জায়গায় পৌঁছানো কখনোই সম্ভব ছিল না বলেও ভাষণে বলেন তিনি।

এদিকে, নবনির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যারিসের আবেগঘণ কণ্ঠে প্রথমেই সমর্থকদের ধন্যবাদ জানাতে ভুলেননি। তার চোখে ছিল বিশ্ব জয়ের প্রতিচ্ছবি। বলেন, গণতন্ত্রের বিজয় ব্যালটের মাধ্যমেই প্রমাণ হয়েছে। আজ থেকে আমেরিকার নতুন সূর্য উঠলো।

এসময় ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস বলেন, ‘আমেরিকার মানুষ একটি সুন্দর দেশ গড়ে তুলতে পারবে। বিপুল ভোট দিয়ে আপনারা আমাদের উপর আস্থা রেখেছেন।

তিনি বলেন, ‘জো বাইডেন এই জাতির নিরাময়কারী। তিনি পরীক্ষিত নেতা। আপনারা একজন বিজ্ঞানসম্মত, ভদ্র, সত্যবাদী লোককে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেছেন।

আরও পড়ুনঃ  এই শহর শুধু মানুষের নয়, সমস্ত অবলা প্রাণীরও

মঞ্চে তাদের সঙ্গে ছিলেন বাইডেন এবং কমলা হ্যারিসের পরিবার। তাদের বক্তব্যের পরপরই রঙিন আলোর ঝলকানি, আতশবাজি ও বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসের ভেসে যায় মঞ্চের আশপাশ।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন