সোমবার, ৯ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকার প্রায় অর্ধেক মানুষ করোনায় আক্রান্ত

ঢাকা শহরের প্রায় অর্ধেক মানুষের কোভিড-১৯ সংক্রমণ ঘটে গেছে। অ্যান্টিবডি পরীক্ষার ফলাফল বলছে, তিন মাস আগেই রাজধানীর ৪৫ শতাংশ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। করোনা-ভাইরাসের জিন বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা অনুমান করছেন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি দেশে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের দাতা সংস্থা ইউএসএআইডি এবং বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহযোগিতায় বাংলাদেশ সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) ও বেসরকারি আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) যৌথভাবে এ গবেষণা পরিচালনা করেন।

গবেষণায় বলা হয়, রাজধানী ঢাকার ৪৫ শতাংশ সাধারণ মানুষের শরীরে কোভিড-১৯ অ্যান্টিবডি পজিটিভ। শহরের বস্তিতে এ হার আরও বেশি, ৭৪ শতাংশ। আক্রান্তদের মাঝে ২৪ শতাংশের বয়স ৬০ বছরের বেশি এবং ১৮ শতাংশের বয়স ১৫ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। যারা কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয়েছে তাদের মধ্যে ৯৪ শতাংশের শরীরে পরীক্ষার সময় লক্ষণ ছিল না। লক্ষণ ছিল মাত্র ৬ শতাংশের শরীরে।

গবেষণার জন্য দৈবচয়ন পদ্ধতিতে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি) ১২৯টি ওয়ার্ডের মধ্য থেকে ২৫টি ওয়ার্ড বেছে নেয়া হয়। প্রতি ওয়ার্ড থেকে একটি মহল্লা বাছাই করা হয়। প্রতি মহল্লা থেকে ১২০টি খানা জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাছাড়া আটটি বস্তিকে গবেষণায় যুক্ত করা হয়। ১২ হাজার ৬৯৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে কোভিড-১৯ শনাক্ত পাওয়া গেছে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের ভিতরে সাধারণ পরিবার এবং জুলাই থেকে আগস্টে বস্তির পরিবারের নমুনা গবেষণার জন্য নেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  করোনায় প্রকাশনা শিল্পে ক্ষতি ৫০০ কোটি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করেন আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআর,বির গবেষক ও বিজ্ঞানীরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে ইউএসএআইডি মিশন ডিরেক্টর ডেরিক এস ব্রাউন।

মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, করোনায় আমাদের দেশে বৃদ্ধ বয়সের মানুষের মৃত্যু অন্য দেশগুলোর তুলনায় কম। যার ফলে মৃত্যুহার কিছুটা কম। যদিও বয়স হিসেবে বাংলাদেশেও বৃদ্ধরাই মারা গেছেন।

দেশে দ্বিতীয়বার কভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ার কিছু তথ্যও পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ, চিকিৎসা ও টিকা দেয়ার বিষয়ে এসব তথ্য কাজে লাগবে বলে জানিয়েছেন তারা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। মন্ত্রী বলেন, আমরা দ্রুত পদক্ষেপ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি, যার সুফল দেশের মানুষ পেয়েছে। এ পর্যন্ত ১ থেকে ১০৯টি ল্যাব হয়েছে, সেন্ট্রাল অক্সিজেন, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলাসহ অন্যান্য সবকিছুর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আনন্দবাজার/এফআইবি

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন