*তিন ব্যাংকে লেনদেন হয়েছে ৮ লাখ ৩২ হাজার ৯৩৭ ডলার
*বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ৭ কোটি ৮ লাখ টাকা
বিশ্বজুড়ে বাড়ছে বৈধ-অবৈধ পথে অর্থপাচারের প্রবণতা। প্রতিবছর স্বয়ং ব্যাংকিং খাতেই বিপুল অঙ্কের অর্থপাচারের ঘটনা ঘটছে। আর এসব লেনদেনের সাথে জড়িত রয়েছে উন্নত বিশ্বের পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশগুলোর বিভিন্ন ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি ও ব্যক্তি।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে বিশ্বের ব্যাংকগুলোর দাখিল করা গোপনীয় নথির উদ্ধৃতি দিয়েছে বাজফিড ও অন্যান্য গণমাধ্যম। গত (২০ সেপ্টেম্বর) রবিবার সন্দেহজনক অর্থপাচারের এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে গণমাধ্যমগুলো।
দেখা যায়, বিপুলসংখ্যক ব্যাংক প্রায় দুই দশক ধরে বিপুল অঙ্কের সন্দেহজনক অর্থ লেনদেন করেছে। অথচ ওই সব অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে কিন্তু ব্যাংক এসব লেনদেন সম্পর্কে অবগত থাকা স্বত্বেও কেন যাচাই করেনি?
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ফিন্যানশিয়াল ক্রাইম এনফোর্সমেন্ট নেটওয়ার্কের (ফিনসেন) কাছে ব্যাংক ও অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দাখিল করা ফাঁস হওয়া সাসপিসাস অ্যাক্টিভিটি রিপোর্টসের (সার্স) নথিতে দেখা যায়, সন্দেহজনক লেনদেনে দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও আফগানিস্তানের নামও রয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে যাওয়া এবং বাংলাদেশে আসা আটটি সন্দেহজনক লেনদেনের খোঁজ পাওয়া গেছে। আট লাখ ৩২ হাজার ৯৩৭ ডলারের এই সন্দেহজনক লেনদেন হয় তিনটি ব্যাংকের মাধ্যমে।
আরও পড়ুন: ব্যাংকগুলো সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা যাচাই করা দরকার : প্রধানমন্ত্রী
ব্যাংক তিনটি হলো রাষ্ট্রমালিকানাধীন রূপালী ব্যাংক, বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল)। এর মধ্যে রূপালী ব্যাংক অর্থ পাঠিয়েছে এবং অপর দুটি ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ এসেছে।
সব মিলিয়ে ব্যাংকগুলোতে ৮ লাখ ৩২ হাজার ৯৩৭ ডলারের লেনদেন হয়েছে। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ৭ কোটি ৮ লাখ টাকা। সব লেনদেন হয়েছে ২০১৪ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে। আবার এসব লেনদেন সংঘটিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও ব্যাংক অব নিউইয়র্ক মেলান করপোরেশনের মাধ্যমে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, যেটা পাওয়া গেছে, এটা নমুনামাত্র। বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচারের ঘটনা আজ সর্বজনস্বীকৃত।
প্রতিটি দেশের ব্যাংকগুলোর হিসাবে হঠাৎ করে বড় অঙ্কের কোনো লেনদেন হয়ে থাকলে সন্দেহজনক রিপোর্ট করার বিধান রয়েছে। এ ছাড়া কোনো লেনদেন নিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের মধ্যে সন্দেহ হলেও এ নিয়ে রিপোর্ট করে থাকে। প্রয়োজন হলে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো এ নিয়ে তদন্ত করে। তাই সন্দেহজনক লেনদেন মানেই অর্থ পাচার নয়।
আনন্দবাজার/ইউএসএস