এবার ট্রেনে করেই বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনভূমি সুন্দরবনে যাওয়ার জন্য রেললাইন নির্মাণে কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এই লক্ষে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যে চীনের কাছে ১ হাজার ৩২৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ঋণ সহায়তাও চাওয়া হয়েছে।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ‘কন্সট্রাকশন অব নিউ বিজি ট্র্যাক ফর্ম নাভারন টু সাতক্ষীরা’ নামে প্রকল্পের অধীনে যশোরের নাভারন থেকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে এই রেলপথ। মুন্সিগঞ্জ হচ্ছে সুন্দরবনেরই একটি পয়েন্ট। মুন্সিগঞ্জের চুনা নদীর ওপারেই গভীর বনাঞ্চল।
এ প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৬২ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৩৩২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। চলতি বছর থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। নাভারন থেকে মুন্সিগঞ্জ গ্যারেজ পর্যন্ত রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য হবে ৯৮ দশমিক ৪২ কিলোমিটার।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সাতক্ষীরা, যাশোর এবং মুন্সিগঞ্জ জেলা অর্থনৈতিকভাবে আরও শক্তিশালী হবে। নতুন এ রেলপথে যাওয়া যাবে সুন্দরবনের খুব কাছাকাছি মুন্সীগঞ্জ পয়েন্টে। সেখান থেকে একটা নদী পাড়ি দিলেই সুন্দরবনের মূল অংশ। সুন্দরবনের উদ্ভিদ এবং প্রাণী বৈচিত্রের কথা চিন্তা করেই ট্রেন সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত যাবে।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, যশোরের নাভারন থেকে মুন্সিগঞ্জ পর্যন্ত থাকবে ৮টি স্টেশন। এগুলো হলো- নাভারন, বাগআচড়া, কলারোয়া, সাতক্ষীরা, পারুলিয়া, কালিগঞ্জ, শ্যামনগর ও মুন্সিগঞ্জ। ব্রডগেজের এ রেললাইনের যাত্রীবাহী ট্রেনের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার।
এই ব্যাপারে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-প্রধান (পরিকল্পনা) আ.ন.ম. আজিজুল হক জানান, বর্তমানে একেবারে প্রাথমিক অবস্থায় আছে প্রকল্পের কাজ। রেলপথটি নির্মাণে চীনসহ কয়েকটি উন্নয়ন সহযোগী খোঁজা হচ্ছে। সুবিধা মতো যার সাথে মিলবে তাকেই এই প্রকল্পের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বেছে নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, সমুদ্র উপকূলবর্তী পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনভূমি সুন্দরবনের আয়তন ৬ হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার। এই বনে রয়েছে বিশ্ব বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের পাখি, চিত্রা হরিণ, কুমির ও সাপসহ অসংখ্য প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত। সুন্দরবনের বিখ্যাত সুন্দরী ও গোলপাতা গাছও পাওয়া যায়।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে