চলতি (২০২০-২০২১) অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কৃষিখাতে ঋণ বিতরণ করেছে এক হাজার ৫০৯ কোটি টাকা। যা আগের মাসের চেয়ে ৬৪ শতাংশ কম। চলতি বছরের জুনে ব্যাংকগুলো কৃষিখাতে ঋণ বিতরণ করেছিল চার হাজার ১৪৮ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যনুসারে, জুনের চেয়ে জুলাইয়ে কৃষিঋণ বিতরণ কমলেও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ঋণ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৫৪ শতাংশ। গত বছর জুলাইয়ে কৃষকদের ৯৭৭ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছিল ব্যাংকগুলো। ।
করোনা মহামারি শুরুর সময়ও কৃষিখাতের উৎপাদন সচল ছিল। তাই মহামারিতে ঋণ বেশি দরকার ছিল কৃষকের। তবে ব্যাংকগুলো কৃষকদে ঠিক সময়ে ঋণসহায়তার দেয়নি। এর কারণে প্রথমবারের মতো গেল অর্থবছরে কৃষিঋণ বিতরণে নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয় ব্যাংকগুলো। গেল (২০১৯-২০) অর্থবছরে কৃষকদের জন্য ২৪ হাজার ১২৪ কোটি টাকা ঋণ বরাদ্দ রেখেছিল ব্যাংকগুলো। তবে অর্থবছরে শেষে এ খাতের ঋণ বিতরণের পরিমাণ দাঁড়ায় ২২ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গেল অর্থবছরে লক্ষ্যের চেয়ে ৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ অথবা এক হাজার ৩৭৫ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ কম হয়েছে।
খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, লকডাউন ঘোষণার পর বন্ধ হয়ে যায় বেশিরভাগ ব্যাংকের শাখাগুলৈা। কিছু খোলা থাকলেও শুধু লেনদেন চলে সীমিত আকারে। এর ফলে কৃষকরা ঋণ আবেদনই করতে পারেননি। আবার ব্যাংকগুলো আগ্রহ করে তেমন কোনো উদ্যোগও নেয়নি। যার ফলে কৃষিঋণ বিতরণ হয়নি।
চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের বার্ষিক কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্য ঠিক করেছে ২৬ হাজার ২৯২ কোটি টাকা। যা ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ বেশি। করোনা মহামারির আর্থিক সংকট মোকাবিলায় ও সরকারের কৃষি ও কৃষকবান্ধব নীতির সাথে সঙ্গতি রেখে টেকসই উন্নয়নের নির্ধারিত লক্ষ্যের প্রথম ও প্রধান তিনটি লক্ষ্য তথা দারিদ্র্যবিমোচন, ক্ষুধামুক্তি এবং গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নের উদ্দেশে পল্লী অঞ্চলে ব্যাপকহারে কৃষিঋণ প্রবাহ বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
কৃষি ও পল্লী ঋণের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনায় চলতি অর্থবছরে ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংক ঋণ বিতরণ করবে ১১ হাজার ৪৫ কোটি টাকা এবং বেসরকারি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ঋণ দেয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে ১৫ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা।
অপরদিকে মহামারির সংকটে কৃষিখাতকে সর্বাত্মকভাবে এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নিজে। বিশেষ প্রণোদনায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করা হয়েছে।
আনন্দবাজার/এফআইবি