ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইন্টারনেট সংযোগহীন জনগোষ্ঠীর শীর্ষ তালিকায় বাংলাদেশ

ডিজিটাল প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ২০২১ সালের মধ্যে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা বর্তমান সরকারের লক্ষ্য। সে লক্ষ্য অর্জনে নানা কার্যক্রমও হাতে নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ঘরে ঘরে বা হাতে হাতে মোবাইল ফোন পৌঁছে গেছে। তবে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য থেকে এখনও অনেকটাই পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। এর কারণ, এখনও দেশের জনগোষ্ঠীর অর্ধেকের বেশি রয়ে গেছে ইন্টারনেট সংযোগের বাইরে।

তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে প্রায় ১০ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। কিন্তু বৈশ্বিক চিত্র বিবেচনায় বর্তমানে ইন্টারনেট সংযোগহীন জনগোষ্ঠীর শীর্ষ তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। বৈশ্বিক গবেষণা সংস্থা স্ট্যাটিস্টার সম্প্রতি প্রকাশিত ‘ইন্টারনেট ইউজেস ওয়ার্ল্ডওয়াইড’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

ইন্টারনেট সংযোগে বাংলাদেশের পিছিয়ে থাকার কারণ জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানান, বর্তমান বাংলাদেশ আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে সমৃদ্ধ। সেই টুজির আমল থেকে এখন দেশে চালু হয়েছে ফোরজি। ফাইভজি পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। ২০০৯ সালে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহার ছিল ৮ জিবিপিএস। বর্তমানে দেশে ২১০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথ ব্যবহার হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহার অনেক বেড়েছে। মানুষ এখন ঘরে বসে অফিসের কাজ করছে। শিক্ষা ব্যবস্থা, অর্থ-বাণিজ্য, স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে সবকিছুই এখন অনলাইনমুখী। ইন্টারনেট ব্যবহারে এখন সারা দেশে ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। এর আগে ব্রডব্যান্ড সংযোগ এতটা ছিল না। এখন তার প্রয়োজনটা তৈরি হয়েছে। নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে বাংলাদেশ আজকের এই অবস্থানে এসেছে। এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে বাংলাদেশ দ্রুতই ইন্টারনেট ব্যবহারে বা প্রযুক্তি ব্যবহারে উন্নত দেশগুলোকেও পেছনে ফেলবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের বৈশ্বিক তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি প্রণয়ন করেছে স্ট্যাটিস্টা। তবে করোনায় দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বেশ কিছুটা বেড়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এতে গেল জুন শেষে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহাকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ৩৫ লাখ। এর মধ্যে মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৯ কোটি ৪৯ লাখ বা প্রায় ৯২ শতাংশ। বাকিটা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট।

যদিও দেশে মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর মোট  ৩৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। এর মধ্যে ১৫ শতাংশ ভ্যাট, ১৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ও ১ শতাংশ সারচার্জ। এছাড়া দেশের মোবাইল ফোন খাতে রয়েছে ওলিগোপলি বাজার (সীমিত সংখ্যক অপারেটর)। এতে অনেকটাই জিম্মি হয়ে পড়েছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা। তাই দেশে মোবাইল ফোনে ব্যবহৃত ইন্টারনেটের মূল্য কমছে না।

জানা গেছে, বর্তমানে বাংলাদেশে ১জিবি ইন্টারনেটের গড় মূল্য ভারতের প্রায় চারগুণ। কেব্ল.কো.ইউকের ‘ওয়ার্ল্ডওয়াইড মোবাইল ডেটা প্রাইসিং: দ্য কস্ট অব ১জিবি অব মোবাইল ডেটা ইন ২৩০ কান্ট্রিজ’ শীর্ষক বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে এসেছে।গেল ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের ২৩০টি দেশের ৬ হাজার ৩১৩টি ১জিবি মোবাইল ডেটা প্ল্যান যাচাই-বাছাই পূর্বক এ বিশ্লেষণটি প্রণয়ন করে। এক্ষেত্রে নানা দেশের প্রায় একই সময়ের ডেটা প্ল্যানের মূল্য বিবেচনা করা হয়েছে।

আনন্দবাজার/এইচ এস কে

সংবাদটি শেয়ার করুন