ঢাকা | শুক্রবার
১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাড়ে ৮২ হাজার শ্রম ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পথে

কোভিড-১৯ সংক্রমণ শুরুর ফলে বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় ছিলেন অনেক শ্রমিক। কিন্তু মহামারী করোনা শুরুর পর থেকেই পুরোপুরি বন্ধ আছে জনশক্তি রফতানি। অপরদিকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাওয়াসহ মহামারীসৃষ্ট বিভিন্ন কারণে যেসব শ্রমিক বিদেশ যাত্রার প্রক্রিয়ায় ছিলেন, শঙ্কাপূর্ণ অনিশ্চয়তার মেঘ ঘিরে ধরেছে তাদের। এরই মাঝে অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ। শেষ হওয়ার পথে আছে আরো সাড়ে ৮২ হাজারেরও বেশি শ্রমিকের ভিসার মেয়াদ।

জনশক্তি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) নিবন্ধিত ১ হাজার ৬০০ রিক্রুটিং এজেন্সির মাঝে ৩২০টির কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, মহামারী শুরুর সময় ইস্যুকৃত বা ইস্যু হওয়ার চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকা ভিসার সংখ্যা ছিল ৮৫ হাজার ৪০৫টি। এসব ভিসাধারী শ্রমিকের অনেকেই সৌদি আরব, কাতার, কুয়েতসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় ছিলেন। যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে তাদের অনেকেই উড়োজাহাজের টিকিটও কিনে রেখেছিলেন। আবার কারো কারো ভিসা হয়েছিল, অথচ টিকিট কাটতে পারেনি। ভিসা ইস্যুর নানা প্রক্রিয়ায় অপেক্ষমাণ ছিলেন আরো অনেকেই। তাদের সবারই এখন যাত্রা অনিশ্চিত।

বায়রার তথ্য বলছে, এরই মাঝে ২ হাজার ১৮৬টি ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে পড়েছে। আর বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাঝে থাকলেও মেয়াদোত্তীর্ণের ঝুঁকিতে আছে আরো ৮২ হাজার ৫৮৯ শ্রমিকের ভিসা। ভিসা স্ট্যাম্পের জন্য অপেক্ষমাণ ছিলেন ৩০ হাজার ৪২২ জন। ভিসা স্ট্যাম্পিং সম্পন্ন হয়েছে ১৯ হাজার ১৯৮ জনের, জনশক্তি ছাড়পত্র পেয়েছে ২২ হাজার ৯৮৭, ফ্লাইট বাতিল হয়েছে ৩ হাজার ৭৪ ও অন্যান্য প্রক্রিয়ায় ছিলেন ৬ হাজার ৯০৪ জন।

এ ব্যাপারে বায়রার মহাসচিব জানান, এখন পর্যন্ত বায়রার সবগুলো সদস্য রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর তথ্য পাওয়া যায়নি। প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে এরই মধ্যে প্রায় ৩ হাজার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে আরো প্রায় ৮২ হাজার। এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। এসব কর্মীর ভিসা প্রক্রিয়ার যাবতীয় কাজ করতে এজেন্সিগুলোর প্রায় ১৬ কোটি টাকা খরচ হয়ে গেছে।

প্রসঙ্গত, দেশে প্রবাসী আয় আহরণের শীর্ষ ১৫টি উৎস দেশের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ আছে সাতটি। এর মধ্যে সবার শীর্ষে আছে সৌদি আরব। এ তালিকায় মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোর মধ্যে আছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), কুয়েত, ওমান, কাতার, বাহরাইন ও জর্ডান।

এদিকে এভাবে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ছুটি নিয়ে দেশে ফেরা প্রবাসীদের বড় একটি অংশ এখন চাকরি হারানোর শঙ্কায় আছে। যদিও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সরকার নিজ নিজ দেশে বাংলাদেশী শ্রমিকদের ফিরিয়ে নেয়া ও ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধির নিশ্চয়তা দিয়েছে। তার পরও স্বস্তিতে নেই প্রবাসীরা।

আনন্দবাজার/এফআইবি

সংবাদটি শেয়ার করুন