ঢাকা | রবিবার
২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুখ থুবড়ে পড়ছে কাশ্মীরের অর্থনীতি

মুখ থুবড়ে পড়ছে কাশ্মীরের অর্থনীতি। জরুরি অবস্থা জারি থাকায় বিপাকে ব্যবসায়ীরা। যান চলাচলে কড়াকড়ির কারণে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। ক্ষমতাসীন বিজেপির দাবি, কাশ্মীরের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করবে সরকার। তবে নতুন করে উন্নয়নের ঘোষণা বিজেপির রাজনৈতিক ইশতেহার বাস্তবায়নের নিজস্ব ভাবনা বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

ভূ-স্বর্গখ্যাত কাশ্মীর। মেঘ ছুঁই ছুঁই শ্বেতশুভ্র বরফে আচ্ছাদিত অনিন্দ সুন্দর এক উপত্যকা। কাশ্মীরে অবস্থিত ঝিলাম নদীর সৌন্দর্য্য আপ্লুত করে, সারা বিশ্বের ভ্রমনপিয়াসিদের। বৈচিত্রময় কাশ্মীরের জীবন-জীবিকা। ৮০ শতাংশ মানুষ সরাসরি জড়িত কৃষিকাজে। এখানে উৎপাদিত আপেল, আঙ্গুরসহ বেশ কিছু ফল রপ্তানি হয়, সারা বিশ্বে। এখানেই উৎপাদিত হয় উন্নতমানের জাফরান।

বছরের পর বছর ধরে পশুপালন, হস্ত ও রেশমশিল্পের সাথেও জড়িত কাশ্মীরিরা। তৈরি পোশাক শিল্পেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে এখানকার ছাগলের চামড়ার। বাহারী কাশ্মীরি শাল ও কার্পেটের খ্যাতিও বিশ্বজোড়া।

আর এসবে ভর করে অন্য রাজ্যগুলোর চেয়ে কাশ্মীর এগিয়ে মানব উন্নয়ন সূচকেও। যদিও ভারতের ২০১৮-১৯ অর্থনৈতিক সমীক্ষা বলছে, জাতীয় মাথাপিছু আয়ের চেয়ে অন্তত ৩৫ ভাগ কম এ উপত্যকায়।

মাসখানেক ধরে জরুরি অবস্থায় স্থবিরতা নেমে এসেছে, কাশ্মীরে। যারা বাইরে থাকেন, স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারছেন না। আর ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ থাকায় মুখ থুবড়ে পড়তে বসেছে, এখানকার অর্থনীতি।

কাশ্মীরের এক দোকানের মালিক বলেন, আমদানি-রপ্তানি সব বন্ধের পথে। কখন কী হয়, সবসময় আতঙ্কে আছি। তরুণদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এই দোকানগুলো আমাদের। কারফিউর কারণে দোকানও খুলতে পারছি না।

বিজেপি সরকার বলছে, ১ কোটি ২৫ লাখ মানুষের এ জনপদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন তরান্বিত করতে চায় তারা।

বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব বলেন, অন্য রাজ্যের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে কাশ্মীরিরা। শুধু উন্নয়ন নয়, কাশ্মীরে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে সরকার। তৃণমূল পর্যায়ে সুস্থ রাজনীতির পরিবেশ ও সবার সমঅধিকারও নিশ্চিত করা হবে।

তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, কাশ্মীর এমনিতেই উন্নত। কেবল নিজেদের রাজনৈতিক ইশতেহার বাস্তবায়নে নিজস্ব উন্নয়ন ভাবনা হাজির করেছে বিজেপি।

ভারতের অর্থনীতিবিদ জন ড্রিজ বলেন, ভারতের উন্নত রাজ্যের একটি কাশ্মীর। শুধু অর্থনৈতিক দিক থেকেই নয়; সামাজিক সূচকেও এগিয়ে কাশ্মীরিরা। স্বাস্থ্য-শিক্ষা এসব ক্ষেত্রে এগিয়ে তারা। সরকারের এ রাজ্য থেকে শেখার আছে। বিজেপি তাদের নিজস্ব উন্নয়ন মডেল এখানে চাপিয়ে দিতে পারে না।

৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত আছে, কাশ্মীরে। জোরদার হচ্ছে স্বাধীনতার দাবিও।

সংবাদটি শেয়ার করুন