দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রেকর্ড পরিমাণ রিজার্ভ থাকার কারণে বর্তমান মহামারিকালে সেখান থেকে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ঋণ দেওয়া যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ সোমবার (৬ জুলাই) একনেক সভায় আলোচনার সময় তিনি এই প্রস্তাব দেন বলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সভার পর এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন।
তিনি জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংককে চিন্তাভাবনা করতে জানিয়েছেন সরকার প্রধান।
এদিকে, বাংলাদেশের রিজার্ভ এখন ইতিহাসের সর্বোচ্চ চূড়ায় রয়েছে। তিন দিন পূর্বে সেই রিজার্ভ ৩৬ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৬০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। বিশ্লেষণ করে দেখা যায় প্রতি মাসে ৪ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হিসাবে এই রিজার্ভ দিয়ে নয় মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুদ থাকতে হয়। সে হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের এখন অনেক বেশি রয়েছে। এই অর্থ অলস না রেখে তা বিনিয়োগে আনতে অনেকদিন ধরেই অর্থনীতিবিদরা পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন।
করোনার এই মহামারিতে পুরো বিশ্বের অর্থনীতিই যখন বিধ্বস্ত, তখন তা কাজে লাগানোর উপর নজর দিলেন প্রধানমন্ত্রী।
পরিকল্পনামন্ত্রী মান্নান জানান, “বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, আমরা বিদেশিদের কাছ থেকে ডলারে ঋণ নিই। আমাদের রিজার্ভ এখন ৩৬ বিলিয়ন ডলার। এখান থেকে আমরা ঋণ নিতে পারি কি না? বাংলাদেশ ব্যাংক জনগণের পক্ষে এই টাকা সংরক্ষণ করে। ওখান থেকে আমরা প্রকল্পের জন্য ঋণ নিতে পারি।
তিনি আরও জানান, বিদেশ থেকে আমরা যে সুদে ঋণ আনি তা একটু কম হলেও দেশের টাকা ব্যবহার করলে লাভের বেশীরভাগ দেশেই থাকবে।
প্রধানমন্ত্রীর এই প্রস্তাবের প্রশংসা করে মান্নান জানান, তিনি অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী ও যুগান্তকারী মন্তব্য করেছেন।
“প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, সাধারণত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটাতে বিদেশি টাকা হাতে রাখা যে কোনো অর্থনীতিতে নিরাপদ এবং স্বস্তিদায়ক। সেখানে এখন প্রায় এক বছরের আমদানি ব্যয় আমরা মেকআপ করতে পারব।”
“সুতরাং শেখ হাসিনা মনে করেন যে, আমদানির ব্যয়ের একটা যুক্তিসংগত পরিমাণ হাতে রেখে রিজার্ভের বাকিটাকে আমাদের অভ্যন্তরীণ ঋণ নিজেদের অর্থ নিজেরা ঋণ নিতে পারি,” জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।
তিনি এ প্রসঙ্গে আরও জানান, “আমরা যেসব দাতা সংস্থার কাছ থেকে ঋণ নিই, অনেক সময় তাদের নিজেদের নানা রকম শর্তের কারণেও প্রকল্পের কাজ সমস্যায় পড়ে। দেশি অর্থায়ন হলে সেই সমস্যাও পরে থাকবে না।
আনন্দবাজার/শাহী