► প্রতিনিয়তই বাড়ছে দেশে দারিদ্র্যের হার
► নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন না বেসরকারি চাকরিজীবীরা, হারাচ্ছেন চাকুরি
► পোশাক কারখানার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ
► ঢাকার বাসা ছাড়ছেন অনেকেই
► কষ্টে আছেন বেসরকারি শিক্ষকরা
► সরকারি ব্যয় কমাচ্ছে একাধিক দেশ
দেশে প্রতিনিয়তই বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এমন পরিস্থিতিতে বন্ধ রয়েছে বেশির ভাগ সরকারি-বেসরকারি অফিস। এর মধ্যে কিছু অফিস চালু হলেও নিয়মিত বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না বেসরকারি চাকরিজীবীরা। তবে এই সংকটকালীন সময়ে ভালো আছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। অফিসে যেতে না হলেও নিয়মিত বেতন-ভাতা পাচ্ছেন তাঁরা। এমনকি তাঁরা করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আর্থিক সুবিধা পাচ্ছেন।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে জানায়, করোনার কারণে দেশে দারিদ্র্যের হার ৩৫ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা যায়, করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে তৈরি হওয়া পরিস্থিতির প্রভাবে শহরের নিম্ন আয়ের মানুষের আয় কমেছে ৮২ শতাংশ। আর গ্রামাঞ্চলের নিম্ন আয়ের মানুষের আয় ৭৯ শতাংশ কমেছে। অনেক ক্ষেত্রে তারা কোনো রকমে তিন বেলা খেতে পারলেও পুষ্টিমান রক্ষা করতে পারছে না।
ঢাকার সাভার ও আশুলিয়ায় শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের হিসাবে এ পর্যন্ত পাঁচ-সাত হাজার শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে। এদিকে গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের ৪৬১ কারখানায় এখনো শ্রমিকদের মে মাসের বেতন দেওয়া হয়নি।
শুধু পোশাক খাত নয়, বেসরকারি খাতের অনেক প্রতিষ্ঠানে কর্মী ছাঁটাই চলছে। প্রবাসী আয়ও কমতে শুরু করেছে, যার উপর নির্ভরশীল নিম্নমধ্যবিত্তদের একটি বড় অংশ। করোনা সংকটের কারণে চাকরি হারিয়ে প্রবাস থেকে লাখ লাখ কর্মীর ফিরে আসার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বেসরকারি চাকরিজীবীরা শঙ্কায় দিন কাটালেও সরকারি চাকুরেদের জন্য গ্রেডভেদে প্রণোদনা আছে ৫ থেকে ৫০ লাখ টাকা। শুধু তা-ই নয়, সরকারি চাকুরেদের জন্য সুখবর আছে প্রস্তাবিত বাজেটেও। আগামী অর্থবছরের (২০২০-২১) বাজেটে তাঁদের জন্য বাড়তি বরাদ্দ থাকছে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা বাবদ বরাদ্দ আছে ৬০ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে সেটা দাঁড়াচ্ছে ৬৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে করোনার কারণে বিশেষ প্রণোদনা ৫০ লাখ, চাকরিকালীন অবস্থায় মৃত্যুর জন্য আট লাখ, ১৮ মাস পর্যন্ত ল্যাম্প গ্রান্ট, কল্যাণ তহবিল থেকে গ্রুপ ইনস্যুরেন্সের টাকা, লাশ দাফনের জন্য পৃথক অনুদান, কল্যাণ তহবিল থেকে পরিবারের জন্য মাসিক ভাতা ইত্যাদি নানা সুবিধা।
কিন্তু ব্যতিক্রম রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে। করোনা পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান নতুন নিয়োগ পাওয়া সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ২০ শতাংশ কমিয়েছে। এরই মধ্যে বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয় কমিয়ে এনেছে ভিয়েতনামও। নিজেদের অর্থনীতিকে কক্ষপথে রাখতে একই ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আরেক দেশ কম্বোডিয়া। দেশটিতে সংক্রমণ প্রায় শূন্যের কোটায়। সরকারি ব্যয় নিয়ন্ত্রণে তারাও কৃচ্ছ্রসাধনের পথেই হেঁটেছে।
বাংলাদেশ নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার জানান, নন-এমপিও প্রতিষ্ঠানে এমনিতেই শিক্ষকরা তেমন বেতন পান না। বেশির ভাগ শিক্ষকই প্রাইভেট-টিউশনি করেন। কিন্তু এখন সবই বন্ধ রয়েছে।
আনন্দবাজার/শহক