করোনাভাইরাসের কারণে লোকসানের মুখে পড়েছে রাজশাহীর রেশম শিল্পখাত। এই রেশম থেকে উৎপাদিত রাজশাহী সিল্কের অবস্থাও সংকটপূর্ণ। কয়েকটা উৎপাদন ও বিপণন প্রতিষ্ঠান লোকসান গুনেই ধ্বংসপ্রায় এ শিল্পকে টিকিয়ে রেখেছে কোনো রকমে। লকডাউনের কারণে আবারও কোটি কোটি টাকা লোকসানের সম্মুখীন হয়েছে এ শিল্পখাত।
রাজশাহী সপুরা সিল্ক ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক সাজ্জাদ আলী বলেন, গত দুই মাস ধরে আমাদের কারখানা ও শো-রুম বন্ধ ছিল। আমরা আমাদের ৪০০ কর্মচারীদের সবাইকে মার্চ ও এপ্রিল মাসের পুরো মাসের বেতন দিয়েছি। এই মাসের বেতন ও ঈদের বোনাসও দিবো। শোরুম সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু করলেও এখনো বন্ধ রয়েছে কারখানা । গত তিন মাসে আমার তিন কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। এই লোকসান তুলতেই আমার এক দেড় বছর লেগে যাবে।
শোরুমে গিয়ে দেখা যায়, প্রত্যেক ক্রেতাকেই শো-রুমের নিচতলায় জীবাণুশাক দিয়ে পুরো শরীর ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে ভেতরে প্রবেশ করানো হচ্ছে। মূল শো-রুমে প্রবেশের সময় শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। আর ভেতরে সামাজিক দূরত্ব মেনেই পণ্য ক্রয় করতে হচ্ছে সবাইকে।
শোরুমের ম্যানেজার সাইদুর রহমান বললেন, শোরুম খুললেও বেচাবিক্রি খুব কম হচ্ছে। গতবছর ঈদের কয়েকদিন প্রতিদিন কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার বিক্রি হতো। এখন সেখানে পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকার বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ রেশম শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি মো. লিয়াকত আলী বলেন, এমনিতে তো রেশম শিল্প ধ্বংসের পথে। তারপরও কোনোরকমে চলছিল এ খাত। করোনাভাইরাস এসে এ খাত ব্যাপক লোকসানে পড়েছে। সারা বাংলাদেশে রেশম শিল্পের ক্ষতি ২০০ কোটি টাকার মতো।
তিনি আরও বলেন, রেশম শিল্পের দুইটি অংশ। একটি গুটি থেকে সুতা উৎপাদন, আরেকটি হচ্ছে বস্ত্রখাত। বস্ত্রখাতের মাধ্যমে পোশাক তৈরি করা হয়। যারা পোশাক তৈরি করে তাদেরও বেচাবিক্রি বন্ধ। শুধু তাই নয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রায় আড়াইশো তাঁতের সঙ্গে যুক্ত ১০ হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছে। এ খাতকে টিকিয়ে রাখতে সরকারি প্রণোদনা প্রয়োজন।
আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস