বাজারে ৩০ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। করোনার সংক্রমণ রুখতে বিপুল পরিমাণের কাগুজে নোট পুড়িয়ে ফেলেছিল চীন। পৃথিবীর অনেক দেশই তাদের পথ অনুসরণ করেছে। বাজারে নতুন নোট ছেড়ে পুরনো নোট তুলে নিচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন ূদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকও। এবার বাংলাদেশ ব্যাংকও এ তালিকায় যুক্ত হচ্ছে।
জানা যায়, প্রাথমিকভাবে ২৫ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট ছেড়ে বাজার থেকে পুরনো টাকা তুলে নেয়া হবে। এর পরও নগদ টাকার প্রয়োজন হলে আরো ৫ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট ছাড়ার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।
সাধারণত ফ্রান্স, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাজ্য থেকে নোট ছাপানোর কাগজ-কালিসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ আমদানি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সরকারি ছুটি ঘোষণার পর বন্ধ হয়ে যাওয়া মেশিনগুলো ফের সচল করা হয়েছে। ছুটিতে যাওয়া কর্মীরাও যোগ দিয়েছেন টাকা ছাপানোর কাজে। এতে কর্মমুখর হয়ে উঠেছে টাঁকশাল।
দেশে টাকা ছাপানো ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ। বিভাগটির তথ্যমতে, আগে থেকেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে এক হাজার টাকার বিপুল পরিমান নোট মজুদ ছিল। ফলে নতুন করে এক হাজার টাকার নোট ছাপানো হচ্ছে না। এবার সবচেয়ে বেশি ছাপানো হবে ৫০০, ২০০, ১০০, ৫০, ২০ ও ১০ টাকার নোট। এর মধ্যে ৫০০ টাকার নোট ছাপানো হচ্ছে ৩৭ কোটি।
এ হিসাবে সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা মূল্যমানের ৫০০ টাকার নোট ছাপানো হবে। মুজিব বর্ষ উপলক্ষে চালু করা ২০০ টাকার নোট ছাপানো হচ্ছে ২০ কোটি। এছাড়া ৩৫ কোটি নোট ছাপানো হচ্ছে ১০০ টাকার। তবে সংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বেশি ছাপানো হচ্ছে ৫০, ২০ ও ১০ টাকার নোট।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে যাওয়ায় এ মুহূর্তে দেশে ছোট নোটের প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি। বেশি মানুষের হাতবদল হওয়ায় ছোট নোট দ্রুততম সময়ে নষ্টও হয়ে যায়। তাছাড়া করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে বাজার থেকে ব্যবহূত ছোট নোটগুলো তুলে নেয়া দরকার। সবদিক বিবেচনা করেই নতুন নোট ছাপানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যদিও এবারের ঈদুল ফিতরে নতুন টাকার চাহিদা কম থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডিমান্ড-সাপ্লাই নীতি অনুসরণ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সারা বছরই বাজারে নোট সরবরাহ করে। প্রতি ঈদের আগেই বাজারে নতুন টাকা ছাড়া হয়। তবে এবারের ঈদের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা তহবিলের ঘোষণা দিচ্ছে। এজন্য করোনার সৃষ্ট দুর্যোগের সবদিক পর্যালোচনা করেই বাজারে নতুন নোট ছাড়া হবে।
আনন্দবাজার/শহক