করোনা নিয়ে আতঙ্ক পুরো দেশ। বন্ধ রাখা হয়েছে বেশিরভাগ কল কারখানা। তবে বন্ধ থাকা অবস্থায় শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার আশ্বাস দেন পোশাক মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ। সেইসঙ্গে মার্চ মাসের বেতন ১৬ এপ্রিলের মধ্যে ব্যাংক কিংবা মোবাইল ব্যাংকিংয়ে পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। কিন্তু বড় বড় কারখানার শ্রমিকদের ৮০ ভাগের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকলেও বাকি শ্রমিকদের নেই কোন ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট। ফলে এমন অবস্থায় বেতন নিয়ে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে হাজার হাজার পোশাক শ্রমিক।
এদিকে ১০ এপ্রিলের মধ্যেই বিজিএমইএ’র সদস্যভুক্ত বেশিরভাগ কারখানায় বেতন হয়ে যাবে। ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত সময় নেওয়া হলেও ১২ এপ্রিলের মধ্যেই মার্চ মাসের বেতন দেওয়ার লক্ষ্য বিজিএমইএর। বর্তমানে বড় বড় কারখানার শ্রমিকদের ৮০ ভাগের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। বাকি শ্রমিকদের জন্য দ্রুত মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট করতে মঙ্গলবার বিকাশ ও রকেটের সঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হকের বৈঠক হয়েছে। যেসব শ্রমিক গ্রামে চলে গেছে তাদের মার্চ মাসের বেতন মোবাইলে ব্যাংকিংয়েও পরিশোধ করতে কাজ করছে সংগঠনটি। এছাড়াও প্রণোদনার টাকায় শ্রমিকদের বেতন দিতে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট প্রয়োজন, সেই কাজটিও এগিয়ে নিচ্ছে বিজিএমইএ।
পুরের একটি পোশাক কারখানার এক শ্রমিক বলছিলেন, বৃহস্পতিবার মার্চ মাসের বেতন দেওয়ার কথা রয়েছে। আর এদিন বিকাশ অ্যাকাউন্ট নম্বর জমা দিতে বলেছে। যাদের নেই কারখানায় তাদের অ্যাকাউন্ট খুলে দেবে। আগামী মাসে এপ্রিলের বেতন ঢুকবে বিকাশে।’
এদিকে মগবাজারের একটি কারখানার শ্রমিক কুদ্দুস বলেন, ‘৪ তারিখ ছুটি শেষ হওয়ার আগেই আমাদের জানিয়ে দেওয়া হয় কারখানা ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। সরকার নতুন করে ছুটি বাড়ানোয় আমাদের ফোনে ফোনে জানিয়ে দেওয়া হয়। এখন ১৫ তারিখ কারখানা খোলার কথা। তবে বেতনের ব্যাপারে আমাদের কিছু জানায়নি।’
বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, ‘বিজিএমইএর পক্ষ থেকে মার্চ মাসের বেতন ১৫ থেকে ১৬ তারিখের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে। ধাপে ধাপে অনেক ফ্যাক্টরিই বেতন দিয়ে দেবে। ৮ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে অনেক ফ্যাক্টরি বেতন দেবে। কিন্তু অনেক শ্রমিকেরই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। আবার এপ্রিলের বেতন দিতে শ্রমিকদের মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট লাগবে। সবমিলিয়ে শ্রমিকদের বেতন প্রাপ্তিই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’
সম্মিলতি গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন সভাপতি নাজমা আক্তার বলেন, ‘শ্রমিকরা এখনও বেতন পায়নি। বিজিএমইএ থেকে বলা হয়েছে, যাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে তাদের কাল-পরশুর মধ্যে বেতন দেওয়া হবে। যাদের অ্যাকাউন্ট নেই তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাতে পারেনি।’
আনন্দবাজার/শহক