বাংলাদেশের অভ্যন্তরে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগের বিশেষ অঞ্চল হিসেবে পরিচিত রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড) তিন দশক অতিক্রম করেছে। এরই মাঝে ইপিজেডের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে আটটিতে। শতভাগ রফতানিমুখী বিনিয়োগের জন্য আলাদা আলাদা গড়ে ওঠা এসব অঞ্চল থেকে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ১৭৭ কোটি ৬৭ লাখ ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেপজা) প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বেপজার তথ্যানুসারে, ইপিজেড থেকে মোট রফতানির সিংহভাগই রফতানি করা হয়েছে চট্টগ্রাম ও ঢাকা ইপিজেড থেকে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে চট্টগ্রাম ও ঢাকা ইপিজেড থেকে যথাক্রমে ৫৭ কোটি ৪৯ লাখ ও ৪৮ কোটি ৯০ লাখ ডলারের পণ্য রফতানি হয়। এছাড়া মোংলা ইপিজেড থেকে ২ কোটি ৭০ লাখ, কুমিল্লা ইপিজেড থেকে ১৩ কোটি ৪৫ লাখ, উত্তরা ইপিজেড থেকে ৬ কোটি ৮৫ লাখ, ঈশ্বরদী ইপিজেড থেকে ৩ কোটি ৫৬ লাখ, আদমজী ইপিজেড থেকে ১৯ কোটি ৩০ লাখ এবং কর্ণফুলী ইপিজেড থেকে ২৫ কোটি ৪২ লাখ ডলারের পণ্য রফতানি করা হয়েছে।
বেপজা সূত্রে জানা যায়, ইপিজেডগুলোতে যেসব পণ্য উৎপাদিত হয় সেগুলোর মধ্যে অন্যতম গার্মেন্ট, গার্মেন্ট অ্যাকসেসরিজ, মেটাল পণ্য, গলফ শ্যাফট, টেক্সটাইল ও নিটিং, চামড়াজাত পণ্য ও জুতা, ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি, ক্যামেরা ও এর লেন্স, মোবাইল ফোনের বিভিন্ন অংশ, এনার্জি সেভিং বাল্ব, এলইডি বাল্ব, বাইসাইকেল, কসমেটিকস ও হলিউড মাস্ক, উইগ ও ফ্যাশন হেয়ার, তাঁবু ও তাঁবুর যন্ত্রাংশ, বাঁশের তৈরি কফিন, ব্যাগ, লাগেজ, থার্মাল ব্যাগ, কৃষিভিত্তিক পণ্য, চশমা, মেডিকেল ও বায়োলজিক্যাল যন্ত্রপাতি, ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য, কার্পেট, জুয়েলারি ইত্যাদি। ইপিজেডগুলোয় বিশ্বখ্যাত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পণ্য উৎপাদিত হয়। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম নাইক, এডিডাস, টয়োটা, মিত্সুবিশি, গ্যাপ, নিশান, মিলার’স, লাফুমা।
১৯৮৩ সালে চট্টগ্রাম জেলার দক্ষিণ হালিশহরে ৪৫৩ একর জমির ওপর গড়ে তোলা হয় চট্টগ্রাম ইপিজেড। এই ইপিজেডের ভেতর শিল্প প্লটের সংখ্যা ৫০১টি। দেশের মোট রফতানির ৩২ শতাংশ বা ৫৭ কোটি ৪৯ লাখ ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে চট্টগ্রাম ইপিজেড থেকে।
চট্টগ্রামের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রফতানি হয়েছে ঢাকা ইপিজেড থেকে। যার পরিমাণ মূল্য ৪৮ কোটি ৯১ লাখ ডলার। যা মোট রফতানির ২৮ শতাংশ। ১৯৯৩ সালে প্রায় ৩৬১ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এ ইপিজেড সাভারে অবস্থিত। এতে মোট ৪৫১টি শিল্প প্লট রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেপজার জেনারেল ম্যানেজার (পাবলিক রিলেশন) নাজমা বিনতে আলমগীর জানান, ইপিজেডের বাইরে রফতানিতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি থাকলেও ইপিজেড থেকে রফতানি ধারা ইতিবাচক। প্রথম প্রান্তিকে রফতানি প্রবৃদ্ধি যেমন ইতিবাচক, তেমনি লক্ষ্য থেকেও পিছিয়ে নেই ইপিজেডগুলো।
আনন্দবাজার/শাহী