গেল মৌসুমে শ্রমিক সংকট, অতিরিক্ত মজুরি, ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে বারো ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এবার বোরো আবাদে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন সুনামগঞ্জ জেলার কৃষকরা। তাই চলতি মৌসুমে ধানের বিকল্প শস্য আবাদে ঝুঁকছেন এই জেলার কৃষকরা।
ধানের বিকল্প হিসেবে ভুট্টা, সরিষা, সূর্যমুখী ফুলের আবাদ করছেন সুনামগঞ্জের হাওর এলাকার কৃষকরা। এসব শস্য উৎপাদন ধানের চেয়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় এবং সরকারি প্রণোদনা পাওয়ার ফলে প্রতিবছর এসব শস্যের উৎপাদন বাড়ছে বলে জানান স্থানীয় কৃষকরা।
একমাত্র বোরো ফসলের উপর নির্ভরশীল থাকতো হাওরবাসী। তবে আগাম বন্যা, অতিবৃষ্টি, শিলাবৃষ্টিসহ নানান প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাওরের বোরো ফসল। এছাড়াও বোরো ধান কেটে ঘরে তুলতে সময় লাগে।
তবে ধানের চেয়ে শস্যের উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় শস্য উৎপাদনে অধিক মুনাফা অর্জন করেন কৃষক। আর এজন্যই হাওরের ধানী জমিতে এখন ধানের পরিবর্তে উচ্চ ফলনশীল জাতের ভুট্টা, সরিষা ও সূর্যমুখীর চাষাবাদ করছেন তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে, চলতি অর্থবছরে ৪২৭ হেক্টর জমিতে ভুট্টা, ২ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে সরিষা, ২৭ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। অথচ গেল বছর ১ হাজার ৬৫৬ হেক্টর জমিতে সরিষা এবং ২৭৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছিলেন কৃষকরা।
কৃষকরা জানিয়েছেন, ধানের চেয়ে শস্যের দাম কয়েক গুণ বেশি। এছাড়ও উৎপাদন খরচ কম ও ঝুঁকি কম থাকার কারণে ধানের পরিবর্তে জমিতে ভুট্টা সরিষা ও সূর্যমুখীর চাষাবাদ করছেন।
ধনপুর ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সামছুল আলম জানান, ধান চাষ করে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে ধানের বিকল্প শস্য আবাদে ঝুঁকছেন তারা। তাই আমরা ধানের বিকল্প শস্য আবাদের জন্য কৃষকদের সহযোগিতা করে আসছি।
আনন্দবাজার/এম.কে