ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে কিডনি রোগ মহামারির আকার ধারণ করতে পারে: বিএসএমএমইউ উপাচার্য

দেশে কিডনি রোগ মহামারির আকার ধারণ করতে পারে বিএসএমএমইউ উপাচার্য

বাংলাদেশে ১০ বছর আগে কিডনি রোগীর সংখ্যা ছিল ৮০ লাখ থেকে ১ কোটি। বর্তমানে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ কোটি। বৃদ্ধির হার এতই বেশি যে অদূর ভবিষ্যতে এটা মহামারির আকার ধারণ করতে পারে বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

বৃহস্পতিবার(১৪ মার্চ) বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

বিএসএমএমইউ উপাচার্য জানান, দেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা প্রায় আড়াই কোটি। তাদের মধ্যে প্রতিবছর আকস্মিক কিডনি রোগীর সংখ্যা ২৫-৩০ হাজার, দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগীর সংখ্যা ৩৫-৪০ হাজার। বাংলাদেশে কিডনি রোগের চিকিৎসক রয়েছে প্রায় ৩০০ জন।

এ বিষয়ে বক্তারা জানান, একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দুটি কিডনির প্রতিটিতে প্রায় ১০-১২ লাখ ছাঁকনি রয়েছে। মানুষের জন্ম গ্রহণের ছয় সপ্তাহের মধ্যেই কিডনির ছাঁকনি বা ফিল্টার মেমব্রেন পুরোপুরি তৈরি হয়। প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ২০০ লিটার রক্ত পরিশোধন করে। এই প্রক্রিয়ায় শরীরের ১ থেকে ৩ লিটার বর্জ্য পদার্থ প্রস্রাবের মাধ্যমে বের হয়।

কোনো কারণে এ ফিল্টার বাধাপ্রাপ্ত হয় তখন আকস্মিক বা দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ হতে পারে। কিডনির কার্যকারিতা যাচাই করাতে রক্তে ক্রিয়েটিনিন পরিমাপ করা যায়। যার মাধ্যমে কিডনি কতটুকু কাজ করছে বোঝা যায়। এ ছাড়া প্রস্রাবে নির্দিষ্ট মাত্রার বেশি প্রোটিন বা এলবুমিন থাকলে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ আছে বলে ধরা হয়।

এছাড়া দেশের শতকরা ১৮ ভাগ মানুষ দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত বলে এক সমীক্ষার উল্লেখ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ১১ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ শতাংশ এবং আইসল্যান্ডে ১০ শতাংশ মানুষ দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত।

আকস্মিক কিডনি রোগের কারণগুলো–ডায়রিয়া, রক্তক্ষরণ, কিডনি প্রদাহ, তীব্র সংক্রমণ, আকস্মিক হৃদ্‌রোগ, কিডনির ক্ষতিকারক কিছু ওষুধ, মূত্রনালির প্রতিবন্ধকতা। লক্ষণগুলো হলো প্রস্রাব কমে যাওয়া বা বন্ধ হয়ে যাওয়া, শরীরে পানি আসা ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়া। কিডনির কার্যকারিতা তিন মাস বা তার বেশি সময় পর্যন্ত লোপ পেলে তাকে দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগ বলা হয়। দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগের কারণগুলো ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, নেফ্রাইটিস ও অন্যান্য। লক্ষণ হলো বমি বমি ভাব, ক্ষুধা মন্দা, প্রথম দিকে ঘন ঘন প্রস্রাব, পরে কমে যাওয়া, ক্রমান্বয়ে দুর্বলতা বৃদ্ধি পাওয়া, রক্ত স্বল্পতা ও শ্বাসকষ্ট।

সংবাদটি শেয়ার করুন