ঢাকা | শুক্রবার
১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খতনা করতে গিয়ে আয়হামের মৃত্যু: মেডিক্যাল সেন্টার সিলগালা

খতনা করতে গিয়ে আয়হামের মৃত্যু মেডিক্যাল সেন্টার সিলগালা

রাজধানীর মালিবাগের জেএস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিক্যাল চেকআপ সেন্টারে সুন্নতে খতনা করাতে গিয়ে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আহনাফ তাহমিন আয়হামের (১০) মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই চিকিৎসককে জেলগেটে দুই দিনের জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদফতর সেন্টারটিকে তালা ঝুলিয়ে সিলগালা করেছে।

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হোসেন মো. মইনুল আহসান।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য মতে, শুধু ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অনুমোদন ছিল প্রতিষ্ঠানটির। হাসপাতালের কার্যক্রমের কোনও অনুমোদন ছিল না। এ বিষয়ে মইনুল আহসান বলেন, আমরা স্থায়ীভাবে এটি বন্ধ করে দেবো।

ডা. ইশতিয়াক নামক একজন এই খতনার সার্জন ছিলেন, আর ডা. মাহবুব মুর্শেদ শিশুটির অ্যানেস্থেসিওলজিস্টস ছিলেন। অভিযোগ অনুসারে অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার সময় শিশুটিকে অজ্ঞান করার পর আর তার জ্ঞান ফেরেনি। পরে আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পেরেছি। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথা বলে প্রতিষ্ঠানটিতে তালা মারা হয়েছে বলে জানান ডা. মইনুল আহসান।

শিশু আয়হামের পরিবারের সদস্যরা জানান, খতনা করাতে মঙ্গলবার ২০ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টার দিকে আহনাফ তাহমিদ আয়হামকে (১০) মালিবাগের ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার পর আর জ্ঞান ফেরেনি তার। তাদের অভিযোগ, লোকাল অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার কথা থাকলেও ফুল অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়া হয় আয়হামকে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ঘটনার পর যে চিকিৎসকের অধীনে ভর্তি করা হয়েছিল তিনি সেখান থেকে চলে যান। পরে হাতিরঝিল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে শিশুটির বাবা। তাতে দুইজন চিকিৎসককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি খতনা করাতে গিয়ে আরও এক শিশুর মৃত্যু হয় রাজধানীতে। গত ৩১ ডিসেম্বর বাড্ডা মাদানী অ্যাভিনিউয়ের ইউনাইটেড মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় পাঁচ বছর ৯ মাস বয়সী আয়ানকে। সেখানে তাকে অস্ত্রোপচারের আগে অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়া হয়। জ্ঞান না ফেরায় তাকে লাইফ ইউনাইটেড হাসপাতালে এনে লাইফসাপোর্টে রাখা হয়। পরে গত ৭ জানুয়ারি দিবাগত রাত ১১টা ২০ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করে। শিশুটিকে এনেসথেসিয়া প্রয়োগ করেন ডা. সাব্বির আহমেদ। আর সার্জারি করেন ডা. মেহজাবীন। এই ঘটনায় তার পরিবারকে ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটে আয়ানের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকদের সনদ বাতিল ও ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়। গত ৯ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহজাহান আকন্দ মাসুম জনস্বার্থে এ রিট দায়ের করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে বাড্ডার সাঁতারকুলের ইউনাইটেড মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও ইউনাইটেড গ্রুপের হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে এ পর্যন্ত কত রোগীর মৃত্যু হয়েছে, তা জানাতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

সংবাদটি শেয়ার করুন