পাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর নির্মাণাধীন পারমানিবক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের ‘ফ্রেস নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান নিয়ে রুপপুরে গাড়ি প্রবেশ করেছে। কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টা ৫ মিনিটে নাটোরের বনপাড়া মহাসড়ক হয়ে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া গোল চত্বর পার হয়। ১টা ২০ মিনিট নাগাদ রূপপুর প্রকল্পের সামনে গিয়ে পৌঁছায়।
সেনাবাহিনী সহ বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ নিরাপত্তা বলয়ে সড়ক পথে এই ইউরেনিয়াম নিয়ে আসা হয়। ফলে সড়কে যানজট তৈরির সম্ভাবনা এড়াতে শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ভোর ৫টা থেকে পাবনা-ঢাকা বাস চলাচল বন্ধ ছিল। দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে পাবনা থেকে যান চলাচল শুরু হয়। পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘পাবনা-ঢাকা মহাসড়কে বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু সেতু পথে প্রচুর যানজট তৈরি হয়। ফলে ইউরেনিয়াম বহনকারী যানবাহন আসতে সমস্যা তৈরি হতে পারে। এ কারনেই মহাসড়কটি যানজট মুক্ত রাখতে ভোর ৫টা থেকে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়। তবে ইউরিনেয়াম প্রকল্পে পৌঁছে গেলেই বাস চালাচল শুরু হয়।’
তিনি জানান, ‘তবে বিকল্প হিসেবে পাবনা থেকে কাজিরহাট ফেরিঘাট নৌপথে আরিচা হয়ে ঢাকায় চলাচল করার পথে খোলা রাখা হয়। ঢাকাগামী যাত্রীরা জরুরী প্রয়োজনে যাতায়াত করতে এ রুটটি ব্যবহার করেছেন।’ এ ইউরেনিয়াম পরিবহনে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিশেষ নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে নাটোরের বনপাড়া ও পাবনার ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া হয়ে রূপপুর প্রকল্প এলাকায় পৌঁছায় ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান।
এদিকে বাস চলাচল বন্ধের এই সিদ্ধান্তে পাবনা থেকে ঢাকাগামী প্রতিটি গাড়ির টিকিট বিক্রি বৃহস্পতিবার রাত থেকে বন্ধ ছিল। পাবনা জেলা মটর মালিক গ্রুপের সভাপতি কাফি সরকার বলেন, প্রশাসনের নির্দেশে আমরা টিকিট বিক্রি বন্ধ রেখেছিলাম। পরে প্রশাসনের অনুমতি পাবার পর বাস চলাচল শুরু করা হয়।
রূপপুর প্রকল্পের একটি দায়িত্বশীল সুত্র জানায়, বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাশিয়া থেকে সফলভাবে দেশে পৌঁছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের জন্য ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল বা ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান।
রোসাটমের জ্বালানি প্রস্তুতকারী কোম্পানি টেভেলের একটি প্রতিষ্ঠান নভোসিবিরস্ক কেমিক্যাল কনসেনট্রেটস প্ল্যান্ট (এনসিসিপি) রূপপুরের এই জ্বালানি উৎপাদন করছে।
আগামী ৫ অক্টোবর রূপপুর প্রকল্পে এ জ্বালানি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্প কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ এ জ্বালানি হস্তান্তর করবেন।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দু’টি ইউনিটের মাধ্যমে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে এ প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়ে চালু করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।