ঢাকা | বৃহস্পতিবার
২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেড়েই চলেছে বিশ্ববাজারে চালের দাম

বেড়েই চলেছে বিশ্ববাজারে চালের দাম

ভারত রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর থেকেই বেড়েই চলেছে বিশ্ববাজারে চালের দাম। গত ২০ দিনে বিশ্ববাজারে চালের দাম বেড়েছে ২০ শতাংশ। চালের অপর দুই যোগানদাতা দেশ থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম যদি বিধিনিষেধ আরোপের মাধ্যমে রপ্তানি সংকুচিত করে, তাহলে চলতি বছরই আরও অন্তত ১৫ শতাংশ বাড়বে এই দাম।

চালের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বরাত দিয়ে শুক্রবার এক প্রতিবেদেন এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

বিশ্ববাজারে চালের সর্বোচ্চ দামের রেকর্ড হয়েছিল ২০০৮ সালে। ওই বছর ভারত, ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ, ব্রাজিল ও অন্যান্য চাল উৎপাদনকারী দেশ আমদানিতে বিধিনিষেধ জারির পর প্রতিটন চালের দাম পৌঁছেছিল ১ হাজার ডলারে।

তবে এবার যদি ভারত দীর্ঘদিন চাল রপ্তানি বন্ধ রাখে, তাহলে তার প্রভাব আরও মারাত্মক হবে। কারণ ২০০৭-’০৮ সালে চালের আন্তর্জাতিক বাজারে ২২ শতাংশ সরবরাহ আসত ভারত থেকে; আর বর্তমানে তা পৌঁছেছে ৪০ শতাংশে।

দিল্লিভিত্তিক একটি রপ্তানি সংস্থার কর্ণধার নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে বলেন, ‘বর্তমানে চালের আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতের গুরুত্ব ২০০৭-’০৮ সালের চাইতে অনেক বেশি। কারণ ওই সময় ভারত ছিল ২২ শতাংশ চালের যোগানদাতা। বর্তমানে ৪০ শতাংশ চালের যোগান যায় ভারত থেকে।’

ফিলিপাইন, চীন, সেনেগাল, নাইজেরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, আইভরি কোস্ট, মালয়েশিয়া এবং বাংলাদেশে ভারতীয় চালের মূল ক্রেতা।

গত ২০ জুলাই সরকারি বিবৃতি জারি করে চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় বিশ্বের শীর্ষ চাল রপ্তানিকারী ভারত। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পূর্ব ও উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে দীর্ঘ খরা ও প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় চলতি বছর চালের উৎদান কম হয়েছে। এ কারণে অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল রাখতে বাসমতি ব্যতীত অন্য সব চালের রপ্তানি স্থগিত করা হচ্ছে।’

তারপর গত ২০ দিনে চালের দামে এই উল্লম্ফণ ঘটেছে বলে শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স।

চাল রপ্তানিতে এগিয়ে থাকা অপর ৩ টি দেশ হলো থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং পাকিস্তান। চালের চালান সরবরাহের বিচারে এই ৩ টি দেশ যথাক্রমে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বৃহত্তম রপ্তানিকারী দেশ।

পাকিস্তানের চাল রপ্তানিকারকদের সংস্থা রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব পাকিস্তান (রিয়েপ) রয়টার্সকে জানিয়েছে, আগে প্রতি বছর ৪০ থেকে ৫০ লাখ টন চাল রপ্তানি করত পাকিস্তান। চলতি বছর ৩৪ লাখ টন চাল রপ্তানির সক্ষমতা রয়েছে দেশটির। কিন্তু সরকার রপ্তানির অনুমতি দেবে কিনা তা এখনও অনিশ্চিত।

এই অনিশ্চয়তার প্রধান কারণ গত বছরের ভয়াবহ বন্যার জেরে কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়া এবং দেশটির সার্বিক মূল্যস্ফীতি ২ অংকে পৌঁছে যাওয়া। পাকিস্তানের সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার রপ্তানির অনুমতি দিতে ‘ইচ্ছুক’ নয়।

এদিকে থাইল্যান্ড-ভিয়েতনাম যদিও এখনও চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি, তবে অভ্যন্তরীন বাজচারে স্থিতিশীলতা রাখতে রপ্তানি সংকোচন করা হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন দুই দেশের কর্মকর্তারা। কারণ দু’ দেশেই চালের দাম বাড়ছে।

গত সপ্তাহে ভিয়েতনামের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী এনগুয়েন হং ডিয়েন এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘যে দেশ আন্তর্জাতিক বাজারে চাল রপ্তানি করে, সেই দেশে চালের দাম বৃদ্ধি গ্রহণযোগ্য নয়।’

আনন্দবাজার/আরি

সংবাদটি শেয়ার করুন