বুধবার, ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
রাঙ্গাবালীতে অতিবর্ষণে কৃষি জমিতে জলাবদ্ধতা

পানির নিচে আমন ক্ষেত, আবাদ ব্যাহতের শঙ্কা

পানির নিচে আমন ক্ষেত, আবাদ ব্যাহতের শঙ্কা

বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ এখন পানিতে নিমজ্জিত। যতদূর চোখ যায়Ñশুধু পানি আর পানি। প্রথম দেখে বোঝার উপায় নেই এসব ফসলের মাঠ নাকি কোন নদী! কোথাও ডুবে আছে আমনের বীজতলা, রোপা আমন। কোথাও আবার ডুবে আছে আউশের ক্ষেত।

একটানা অতিবৃষ্টিতে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে ফলসি ক্ষেতে এভাবেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে শনিবার শুরু হওয়া এ বৃষ্টি সোমবার পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। এরআগে পূর্ণিমা ও নিম্নচাপের প্রভাবে ১ আগস্ট থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি শুরু হয়। আবহাওয়া অফিস বলছে, এই বৃষ্টি আরও দুইদিন অব্যাহত থাকবে।

সোমবার সরেজমিনে উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের তিল্লা, নয়াভাঙ্গুনি, সাজির হাওলা, কোড়ালিয়া ও চরইমরাশন ঘুরে দেখা গেছে, টানা এই বৃষ্টিতে তলিয়েছে আমন ও আউশের বিস্তীর্ণ মাঠ। ফলে বীজতলা তলিয়ে যাওয়ায় চলতি মৌসুমে আমন আবাদ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা করছেন সেসব এলাকার কৃষকরা।

সাজির হাওলা গ্রামের কৃষক রাজ্জাক ও জাকির হোসেন বলেন, ‘সব জমিতে বৃষ্টির পানি। হাটু সমান পানিতে ডুবে আছে ফসল। এখনই বৃষ্টি না কমলে এবার আমন আউশ সব জলে যাবে।’ তিল্লা গ্রামের কৃষক হোসেন আলী বলেন, ‘আমাদের কপালটাই খারাপ। আমনের শুরুতে প্রচন্ড খরা। এখন আবার বৃষ্টি। দুই সময়ই আমাদের বীজতলা নষ্ট হয়েছে।’

কৃষি বিভাগ জানান, চলতি মৌসুমে ৩০ হাজার ১৬০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৫ হাজার ৯৮০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। বীজতলা প্রস্তুত করা হয়েছে ১ হাজার ৯৬০ হেক্টরে। আউশ আবাদ করা হয়েছে ৪১০ হেক্টরে। কৃষি বিভাগ জানান, প্রায় শতভাগ ফসলি জমি এখন পানিতে নিমজ্জিত। বৃষ্টি না কমলে ক্ষতি বাড়ার শঙ্কা করছেন তারা।

আরও পড়ুনঃ  চাহিদা বাড়ছে দেশীয় ফলের

স্থানীয় কৃষকরা, এবার আমন মৌসুমের শুরুতে তীব্র খরার কারণে বীজতলা নষ্ট হয় অনেক কৃষকের। এখন আবার অতিবৃষ্টিতে উপজেলার রাঙ্গাবালী, ছোটবাইশদিয়া, বড়বাইশদিয়া, চরমোন্তাজ, চালিতাবুনিয়া ও মৌডুবি ইউনিয়নের শতভাগ কৃষি মাঠ পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। পানি না সরলে আবারও নষ্ট হবে বীজতলা। ব্যাহত হবে আমন আবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা । তাই দিশেহারা কৃষকরা।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, ‘অতি শিগগিরই টানা এই বৃষ্টি কমলে ক্ষতি পুষিয়ে কৃষকরা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবে। তবে বৃষ্টির পরপরই প্রখর রোদ উঠলে ফসলের ক্ষতি হবে; বলছেন এই কর্মকর্তা।’

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন