গেল শুক্রবারের বৃষ্টিতে ধান আর বাড়ি আনা সম্ভব হয়নি খুলনার কৃষকদের। বৃষ্টিপাতে মাঠ তলিয়ে যাওয়ার জন্য ধান নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন সেখানকার কৃষকেরা। পৌষেমাসের অসময়ের ঝড়ো বৃষ্টিতে ক্ষেতের ধানগাছ পচে যাচ্ছে।
এরপর আবার ভারী বর্ষণ হওয়ায় করণে ক্ষেতগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জমে থাকা পানি থেকে ধান কেটে ঘরে তুলতে শ্রমিককে অতিরিক্ত মজুরি দিতে হচ্ছে অনেক কৃষককে। এসব ভেজা ধান শুকানো নিয়েও রয়েছে আবার আরেক দুর্ভোগ। গেল কয়েক মাসের পরিশ্রম আর বিনিয়োগের ফল ঘরে তোলার সময়ে এমন দুর্দশা দেখতে হচ্ছে কৃষকদের।
জেলার আনন্দনগর গ্রামের কৃষক মানিক গাজী জানান, বৃষ্টির পানিতে বিভিন্ন এলাকার আমন ধান তলিয়ে গেছে। এতে কষ্টের ফলানো ফলস তোলা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে পাকা ধান।
একই এলাকার কৃষক সমরেশ বলেন, এখন অনেক বিপদে আছেন এ অঞ্চলে কৃষকরা। অনেকেই জমিতে এবার ধান আবাদ করে ছিলো। ধান কাটাও শেষ হয়েছে ছিল। কিন্তু ধান বাড়িতে আর নিয়ে আসতে পারেননি। কারণ ক্ষেতে পানি জমে কাটা ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
পানখালি ইউনিয়নের হোগলাবুনিয়া গ্রামের কৃষক শেখ রসুল বলেন, একদিনের বৃষ্টির পানিতেই পাকা ধানের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য দ্রুত কোন ব্যবস্থা না থাকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা।
খুলনা জেলা আবহাওয়া কার্যালয়ের কর্মকর্তা আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ জানিয়েছেন, খুলনা জেলায় শুক্রবার ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। রোববার (৫ জানুয়ারি) থেকে আবহাওয়া স্বাভাবিক হতে পারে। তবে আকাশ মেঘলা থাকর সম্ভাবনা রয়েছে।
জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর উপ-পরিচালক পংকজ কান্তি মজুমদার জনান, দাকোপ, পাইকগাছা , কয়রা, বটিয়াঘাটা ও ডুমুরিয়ার নিচু এলাকার ধানক্ষেত গুলোতে বৃষ্টির পানি জমেছে। তবে পানি নেমে গেলে ধানের তেমন ক্ষতি হবে না। যে ধান কেটে জমিতে রাখা হয়েছে সেগুলোর বেশি ক্ষতি হবে। তবে যেটা কাটা হয়নি সেগুলোর তেমন ক্ষতি হবে না।
তিনি বলেন, এ মৌসুমে খুলনা জেলায় প্রায় ৯২ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার ৯০ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে।
আনন্দবাজার/এম.কে