- পুঁজিবাজারে পতন দিয়েই সপ্তাহ শুরু
- ভাটায় ৪২২ কোটি টাকায় লেনদেন
- লেনদেনসহ সব ধরনের সূচক মন্দা
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল রবিবার সব ধরনের সূচক পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। লেনদেন পরিমাণ ডিএসইতে কমলেও সিএসইতে বেড়েছে। ডিএসইতে লেনদেন কমে ৪শ কোটি টাকার ঘরে এসেছে। বিক্রেতার পরিমাণ দুই স্টকেই বেড়েছে।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবারও ফ্লোর প্রাইজের কারণে ডিএসইতে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর অপরিবর্তিত ছিল। এদিন বিক্রেতার চাপ বেশি ছিল। বিক্রেতার চাপের একই অবস্থা ছিল সিএসইতে। আরও বলেন, সরকারের নতুন সময় সূচির প্রথম কার্যদিবস ডিএসইতে গত ২৪ আগস্ট পতন হয়েছিল। যা আগের টানা ছয় কার্যদিবস উত্থানের পর এই মন্দা। পতন পরের দুই কার্যদিবস (বৃহস্পতিবার ও রবিবার) উত্থানে ছিল পুঁজিবাজার। ওইসময় লেনদেন দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছিলো।
পরেরদিন সোমবার লেনদেনে ভাটা পড়ে। সেখান থেকে পরের দুই কার্যদিবস লেনদেন কিছুটা বাড়ে। পরেরদিন লেনদেন আবারো কমে। এরপরের কার্যদিবস লেনদেন বেড়ে ২৩শ কোটি টাকায় ওঠেছিল। পরে জোয়ার-ভাটায় চলে পুঁজিবাজারের লেনদেন। গত ২০ সেপ্টেম্বর লেনদেন বছরের সেরা রেকর্ড করেছিলো। ওইদিন লেনদেন ২৮শ কোটি টাকা এসেছিলো। পরে ফের জোয়ার-ভাটায় পড়ে লেনদেন। এরই ধারায় গতকাল বৃহস্পতিবার লেনদেন ভাটায় ৪২২ কোটি টাকায় নেমে এসেছে।
স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রমতে, গতকাল ডিএসইতে ৪২২ কোটি ৮৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবস গত বুধবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৫৫২ কোটি ১৩ লাখ টাকার শেয়ার। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫০ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২১৫ দশমিক ২৪ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক ১৯ দশমিক ৫০ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক ১৫ দশমিক ৩২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ১৮০ দশমিক ৪০ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৩৪৮ দশমিক ৮৬ পয়েন্টে।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩০৮টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ২০টি এবং কমেছে ৬৮টির। শেয়ার পরিবর্তন হয়নি ২২০টির। এদিন ডিএসইতে ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন ওরিয়ন ফার্মা ৩৪ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে সী পার্ল বিচ ১৮ কোটি ৫ লাখ টাকা, নাভানা ফার্মা ১৮ কোটি ৪ লাখ টাকা, পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ১৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা, ইস্টার্ন হাউজিং ১৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা, বসুন্ধরা পেপার ১৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, ইন্ট্রাকো ১৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা, সামিট এলায়েন্স পোর্ট ১২ কোটি ৪২ লাখ টাকা, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ১০ কোটি ২২ লাখ টাকা এবং আমরা টেক ৯ কোটি ৩ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
অপরদিকে, সিএসইতে গতকাল লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকা শেয়ার। আগের কার্যদিবস বৃহস্পতিবার ৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৫২টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ২৭টি, কমেছে ৩৬টি এবং পরিবর্তন হয়নি ৮৯টির।
এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৪৮ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৪৪৪ দশমিক ১০ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক ১ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ৩০ দশমিক ৮২ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ২৯ দশমিক ৪২ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক ৪ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩২০ দশমিক ৪৪ পয়েন্টে, ১৩ হাজার ২১৩ দশমিক ৩৭ পয়েন্টে, ১১ হাজার ৫২ দশমিক ২০ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ১৬২ দশমিক ৬৬ পয়েন্টে।
এদিন সিএসইতে প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স ২ কোটি ৯৪ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে সী পার্ল বিচ ৭০ লাখ টাকা, আমান কর্টন ৪৮ লাখ টাকা, সামিট এলায়েন্স পোর্ট ৪৫ লাখ টাকা, ওরিয়ন ফার্মা ৪৩ লাখ টাকা, কেডিএস এক্সসরিজ ৪০ লাখ টাকা, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ৩২ লাখ টাকা, পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ২৮ লাক টাকা, জেএমআই হসপিটাল ২৪ লাখ টাকা এবং ইস্টার্ন হাউজিং ২৩ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।