শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পায়রার সক্ষমতায় আরেক ধাপ

পায়রার সক্ষমতায় আরেক ধাপ

নৌবহরে অত্যাধুনিক ৮ টাগ বোট যুক্ত

  • বেড়েছে বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রমে গতিশীলতা: হারবার মাস্টার, পায়রা বন্দর

তৃতীয় সমুদ্রবন্দর পায়রা’র নৌবহরে যুক্ত করা হলো অত্যাধুনিক টাগ বোটসহ ৮টি নৌযান। এর মধ্য দিয়ে পায়রা বন্দর অপারেশনাল কার্যক্রমে আরও এক ধাপ সক্ষমতা অর্জন করলো। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এসব নৌযানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এরপর রাবনাবাদ চ্যানেলে এসব নৌযানের মহড়া প্রদর্শিত হয়।  স্থানীয়রা এ মহড়া প্রত্যক্ষ করেন এবং করতালি দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।

পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মো. আজিজুর রহমান জানান, বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রমের জন্য ২টি টাগ বোট, ১টি বয়ালেয়িং ভেসেল, ১টি সার্ভে বোট, ২টি নিরাপত্তা টহল জলযান ও ২টি পাইলট বোট সংযুক্ত করা হয়েছে। পায়রা বন্দরে যুক্ত টাগবোট নেদারল্যান্ডের ডামেন শিপইয়ার্ডে একটি এবং খুলনা শিপইয়ার্ডে একটি তৈরি করা হয়েছে। ডামের শিপইয়ার্ডে তৈরি অত্যাধুনিক টাগবোটের দৈর্ঘ্য ২৮ মিটার প্রস্থ ১১ মিটার। এর গভীরতা ৪ দশমিক ৫ মিটার। এর ধারণ ক্ষমতা ৪০০ টন।

অপরদিকে খুলনা শিপইয়ার্ডে তৈরি টাগবোটের দৈর্ঘ্য ৩৫ দশমিক ৫ মিটার এবং প্রস্থ ১০ মিটার। এর গভীরতা ৪ দশমিক ৭ মিটার। এর ধারণ ক্ষমতা পাঁচশ টন। ১৪ থেকে ১৫ নটিক্যাল মাইল বেগে এসব বোট চলতে পারবে। পায়রা বন্দরের পাশ দিয়ে বহমান ‘টিয়াখালী’ নদীর নামে টিয়াখালী-১ ও টিয়াখালী-২ নামে এ বোট দুটির নামকরণ করা হয়েছে। ডামেন শিপইয়ার্ডে নির্মিত বোটটি তৈরিতে খরচ হয়েছে ৮২ কোটি টাকা। খুলনা শিপইয়ার্ডে বোট তৈরিতে খরচ হয়েছে ৩৭ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা। কোনো বিদেশী জাহাজ বা দেশীয় নৌযান দুর্ঘটনার কবলে পড়লে দ্রুত উদ্ধার করা এবং চ্যানেলে জাহাজ আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে টাগবোট সাহায্যকারী জাহাজ হিসেবে কাজ করবে।

আরও পড়ুনঃ  ভংয়ঙ্কর মাদক ‘শয়তানের শ্বাস’

বয়ালেয়িং ভেসেল নারায়নগঞ্জের আনন্দ শিপইয়ার্ড এটি তৈরি করছে। এ বোট তৈরিতে খরচ হয়েছে ৩৪ কোটি ৪৯ লক্ষ ১৫ হাজার ৮২৬ টাকা। এটির নামকরণ করা হয়েছে পায়রা বন্দরের পাশ্ববর্তী উপজেলা ‘রাঙ্গাবালীর’ নামে। এর দৈর্ঘ্য হলো ৪৪ দশমিক ৬০ মিটার এবং প্রস্থ ১০ দশমিক ৫০ মিটার। গভীরতা হলো ৩ দশমিক ৫০ মিটার। ১২ নটিক্যাল মাইল বেগে এ বোট চলতে পারবে। এর ধারণ ক্ষমতা ৫৮০ টন। বিদেশ থেকে আসা পণ্যবাহী ও বিভিন্ন ধরণের মালামাল বহনকারী জাহাজকে পথ দেখিয়ে আনা-নেয়ার কাজ করে এ ভেসেল।

তা ছাড়া সমুদ্র অথবা নদী পথের কোথাও কোনো বয়া স্থাপন করা, ক্ষতিগ্রস্ত বয়া তুলে আনা, আবার মেরামত করার পর নির্দিষ্ট জায়গায় স্থাপন করার কাজও এ ভেসেলের মাধ্যমে করা হয়। এছাড়া সার্ভে বোট নারায়নগঞ্জের ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড (ডিইডব্লিউ) এটি তৈরি করেছে। এ বোট তৈরিতে খরচ হয়েছে ২১ কোটি ৫০ লক্ষ ৩৩ টাকা। এ বোটের নাম রাখা হয়েছে ‘সাগরযাত্রা’। এর দৈর্ঘ্য ৩০ দশমিক ৪৮ মিটার এবং প্রস্থ ৬ দশমিক ৬২ মিটার। গভীরতা হলো ৩ দশমিক ৮০ মিটার। ১০ থেকে ১২ নটিক্যাল মাইল বেগে এ বোটের চলার সক্ষমতা রয়েছে।

পলি পড়ে নদী-সাগরের নাব্যতা কমে গেলে সার্ভে বোট দিয়ে তা যাচাই করা হয়। নদী-সাগরের পানি কমছে না বাড়ছে তা-ও সার্ভে বোট দিয়ে পরিমাপ করা হয়। বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম চলমান রাখার স্বার্থে প্রতিমাসেই এ কাজগুলো বন্দর কর্তৃপক্ষ করে থাকে। নিরাপত্তা টহল জলযান দুইটি খুলনা শিপইয়ার্ড তৈরি করেছে। এতে খরচ হয়েছে ৬৪ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা।

আরও পড়ুনঃ  ১২ ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ১৭ হাজার কোটি টাকা

পায়রা বন্দরের পাশ দিয়ে বহমান ‘রাবনাবাদ চ্যানেলের’ নামে রাবনাবাদ-১ ও রাবনাবাদ-২ নামে এ জলযান দুটির নামকরণ করা হয়েছে। এর দৈর্ঘ্য ৩৪ দশমিক ৯০ মিটার এবং প্রস্থ ৬ দশমিক ৯২ মিটার। গভীরতা হলো ৩ দশমিক ৭ মিটার। ২৫ নটিক্যাল মাইল বেগে এটি চলতে পারবে। এসব জাহাজ দিয়ে উপকূলীয় এলাকায় নিয়মিত টহল দেয়া, চোরাচালান বিরোধী অভিযান, দুর্ঘটনা পরবর্তি উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম, মৎস্য সম্পদ সংরক্ষন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরবর্তি উদ্ধার ও ত্রান তৎপরতা পরিচালনা এবং পরিবেশদূষণ প্রতিরোধসহ নানা ধরণের কার্যক্রম পরিচালনা করা যায় এ জলযানের মাধ্যমে।

পাইলট বোট খুলনা শিপইয়ার্ড তৈরি করেছে। ‘তেতুলিয়া’ নদীর নাম অনুসারে এ বোটের নামকরণ করা হয়েছে তেতুলিয়া-১ ও তেতুলিয়া-২। এ দুটি পাইলট বোট তৈরিতে খরচ হয়েছে ৫১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা। এর দৈর্ঘ্য ৩৬ মিটার এবং প্রস্থ ৭ মিটার। গভীরতা হলো ৩ দশমিক ৮ মিটার। এ বোট ২৪ নটিক্যাল মাইল বেগে চলতে পারবে। বন্দর থেকে পাইলটদের বহির্নোঙরে অবস্থান করা জাহাজে উঠিয়ে দেয়া এবং বহির্নোঙরে থাকা জাহাজ থেকে পাইলটদের …

সংবাদটি শেয়ার করুন