বিএসইসির সিদ্ধান্তে চতুর্থ দিনেও পতন
লেনদেন
- ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতা বেশি
- ডিএসইতে হাজার কোটি টাকা
- সিএসইতে ৪১ কোটি টাকা
- সেরা ডিএসইতে ওরিয়ন ফার্মা
- সিএসইতে বিডি ফাইন্যান্স
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল মঙ্গলবার প্রধান সূচক (ডিএসইএক্স ও সিএএসপিআই) পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এসময় দুই স্টকে লেনদেন পরিমাণ কমেছে। লেনদেন কমে ডিএসইতে হাজার কোটি টাকায় নেমে এসেছে। আর সিএসইতে ৪১ কোটি টাকায় নেমেছে। উভয় স্টকে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে। ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতার চাপ বেশি ছিল। লেনদেন সেরা ডিএসইতে বেক্সিমকো। অপরদিকে সেরা সিএসইতে বিডি ফাইন্যান্স।
পতন প্রসঙ্গে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বর চেক ব্রোকারেজ হাউজের হিসাবে নগদায়ন বা জমা না হওয়া পর্যন্ত বিনিয়োগকারী লেনদেন করতে পারবে না বলে বিএসইসি এক সিদ্ধান্ত নেয়। এই কারণে ওইসময় পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। দুইদিনের মাথায় একই বছরের ৮ ডিসেম্বর সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত করতে বাধ্য হয় বিএসইসি। কিন্তু চলতি বছরের গত ১১ অক্টোবর বিএসইসির সেই একই সিদ্ধান্ত কার্যকরের জন্য ডিএসইর মাধ্যমে ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে জানানো হয়। এমন সিদ্ধান্তের খবরে গত বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারে ফের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সেই ধারা এখনও অব্যাহত।
এদিকে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে গ্রাহকের জমাকৃত চেক নগদায়নের পর ক্রয় আদেশ বাস্তবায়নের নির্দেশনাটি প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন সিইও ফোরাম এবং ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)। এ বিষয়ে বিএসইসি ও ডিএসইর কাছে পৃথকভাবে সংগঠন দুইটির পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া দেওয়া হয়েছে। সংগঠন দুইটি জানান, এরআগে নির্দেশনাটি ২০১০ সালে জারি করা হয়। পরবর্তীতে তা স্থগিত রাখা হয়। কিন্তু গত সপ্তাহে নির্দেশনাটি পুনরায় ব্রোকারদের কাছে পাঠানো হয়। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।
স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার ডিএসইতে ১ হাজার ৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবস সোমবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ২৯৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকার শেয়ার। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১২ দশমিক ৩১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৪০০ দশমিক ৭০ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক দশমিক ১০ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক দশমিক শূন্য ৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ২৭৭ দশমিক ৪৪ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৪০৬ দশমিক ৮৩ পয়েন্টে।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৬৯টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৪৯টি এবং কমেছে ১০০টির। শেয়ার পরিবর্তন হয়নি ২২০টির। এদিন ডিএসইতে ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন ওরিয়ন ফার্মা ৬৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ইস্টার্ন হাউজিং, জেএমআই সিরিঞ্জ, বেক্সিমকো, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, মনোস্পল পেপার, জেএমআই হসপিটাল, সোনালী পেপার, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন এবং বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমসের শেয়ার।
অপরদিকে, সিএসইতে গতকাল মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছে ৪১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা শেয়ার। আগের কার্যদিবস সোমবার ৬৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২০০টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৩৬টি, কমেছে ৮০টি এবং পরিবর্তন হয়নি ৮৪টির। এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৪১ দশমিক ১৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৮৫৪ দশমিক ১৭ পয়েন্টে। সিএসই-৫০ সূচক দশমিক ৩২ পয়েন্ট এবং সিএসসিএক্স সূচক ২৪ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩৬০ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্টে এবং ১১ হাজার ৩০০ দশমিক ৮৭ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই-৩০ সূচক ২৬ দশমিক ৩১ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক ৩ দশমিক ১৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১৩ হাজার ৩৫৮ দশমিক ১৭ পয়েন্ট এবং ১ হাজার ২১৯ দশমিক ৩২ পয়েন্টে।
এদিন সিএসইতে বিডি ফাইন্যান্সের শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন বিডি ফাইন্যান্স ২৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে কেডিএস এক্সেসরিজ, আইপিডিসি, মনোস্পল পেপার, সোনালী পেপার, বেক্সিমকো, ওরিয়ন ফার্মা, জেএমআই সিরিঞ্জ, জেএমআই হসপিটাল এবং আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের শেয়ার।