ঢাকা | বৃহস্পতিবার
১লা মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মুনাফার দৌড়ে কেরু

মুনাফার দৌড়ে কেরু

দেশের একমাত্র মদ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কেরু অ্যান্ড কোম্পানির মদের উৎপাদনের সঙ্গে বিক্রিও বেড়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোর তুলনায় চলতি বছর বিক্রি বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। গত বছরের তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রায় ১০ লাখ প্রুফ লিটার বেশি মদ বিক্রি করেছে কেরু। প্রথমবারের মতো ডিস্টিলারি ইউনিট থেকে কেরু ১০০ কোটি টাকারও বেশি মুনাফা করেছে। আগের বছর এই সংখ্যা ছিল প্রায় ৯০ কোটি টাকা।

কেরু অ্যান্ড কোম্পানির মদের ৯টি ব্র্যান্ড রয়েছে। এগুলো হলো- ইয়েলো লেবেল মল্টেড হুইস্কি, গোল্ড রিবন জিন, ফাইন ব্র্যান্ডি, চেরি ব্র্যান্ডি, ইম্পেরিয়াল হুইস্কি, অরেঞ্জ কুরাকাও, জারিনা ভদকা, রোসা রাম ও ওল্ড রাম। কেরু ১৭৫ মিলিলিটার, ৩৭৫ মিলিলিটার এবং ৭৫০ মিলিলিটারের বোতলে মদ বাজারজাত করে থাকে।

দেশে বিদেশি মদের আমদানি নিয়ন্ত্রণ করায় কেরুর মদের চাহিদা বেড়েছে। তাছাড়া গত বছর শুল্ক ফাঁকি রোধে মদ আমদানিতে নজরদারি বাড়ায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এতে বৈধপথে হ্রাস পায় মদ আমদানি। এ কারণে বিদেশি মদের সংকট দেখা দেয় দেশের অনুমোদিত বারগুলোতে। তারপর থেকে ক্রমেই বৃদ্ধি পায় দেশে উৎপাদিত মদের চাহিদা। সেই চাহিদা পূরণে উৎপাদন বাড়ায় প্রতিষ্ঠানটি।

মদ বিক্রিকরা প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়কর্মীরা বলছেন, বিদেশি মদ বিক্রি অনেকটাই সীমিত হয়ে যাওয়ায় গ্রাহকরা কেরুর মদের দিকে ঝুঁকছে। ফলে কেরুর মদের চাহিদা গেছে বেড়ে, কিন্তু জোগান সে তুলনায় অনেক কম।

জানতে চাইলে কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোশাররফ হোসেন বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রায় ৪২ লাখ লিটার মদ বিক্রি হয়। করোনাকালীন ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৫৪ লাখ ২৮ হাজার লিটার মদ বিক্রি হয়। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরের তিন মাসে উৎপাদন হয়েছে ১৪ লাখ ৬০ হাজার লিটার।

মোশাররফ হোসেন বলেন, গত বছর ৫৪ লাখ লিটারের বেশি মদ বিক্রি হয়েছে। আর চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসেই সাড়ে ১৪ লাখ লিটার বিক্রি হয়েছে। এ বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর অবধি প্রায় ৬০ হাজার কেইস মদ বিক্রি হয়েছে। গত বছরের একই সময়ের তিন মাসে (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর) বিক্রি ছিল ৩২ হাজার ৮৪৮ কেইস।

উৎপাদন ও বিক্রয় বৃদ্ধি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মোশাররফ হোসেন বলেন, কেরু অ্যান্ড কোম্পানি মদের উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করছে। আগামী জানুয়ারি থেকে অটোমেশনে উৎপাদন গেলে জোগান দ্বিগুণ হয়ে যাবে। বর্তমানে আমাদের ঢাকা, চট্টগ্রাম ও দর্শনায় তিনটি বিক্রয় কেন্দ্র রয়েছে পাশাপাশি জোগান সহজলভ্য করতে কক্সবাজার ও কুয়াকাটায় নতুন দুটো বিক্রয় কেন্দ্র করার পরিকল্পনা করছি। নতুন দুটো বিক্রয় কেন্দ্র চালু হলে বিক্রি আরও বেড়ে যাবে।

উল্লেখ্য, ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে সরকার এই এটিকে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা করে। কেরু অ্যান্ড কোং -এর বর্তমানে ছয়টি ইউনিট রয়েছে: চিনি, ডিস্টিলারি, ফার্মাসিউটিক্যালস, বাণিজ্যিক খামার, আকন্দবাড়িয়া খামার (পরীক্ষামূলক) এবং জৈব সার। এর মধ্যে শুধু ডিস্টিলারি ও জৈব সার ইউনিটই লাভজনক।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন