ঢাকা | শুক্রবার
২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বাধুনিক ডাটা সেন্টার

সর্বাধুনিক ডাটা সেন্টার

চলতি বছরেই পাওয়া যাবে: ডিএসই চেয়ারম্যান

আমরা খুব গুরুত্বের সাথে আধুনিক ডাটা সেন্টার নিয়ে কাজ করছি। এই ডাটা সেন্টার বিভিন্ন বাধা সত্ত্বেও এগিয়ে যাচ্ছে। চলতি বছরের মধ্যেই আমরা একটা সর্বাধুনিক ডাটা সেন্টার পাব বলে জানিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান।

গতকাল সোমবার বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার মো. আব্দুল হালিম।

ইউনুসুর রহমান বলেন, বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহের ফসল আমরা কিভাবে ঘরে তুলবো, এর থেকে কিছু আমরা কিভাবে শিখব- সেটা নিয়ে আমি কিছু কথা বলতে চাচ্ছি। বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ পালনের সাধারণ লক্ষ্য হচ্ছে ইনভেস্টর এডুকেশন এবং প্রোটেকশন। এর সাধারণ লক্ষ্যের সাথে সামাঞ্জস্য রেখে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশন (আইওএসকো) সেটা ২০২২ সালের জন্য একটা ম্যাসেজ দিয়েছে তাদের ওয়েবসাইটে। তাতে দুটি বিষয়ের উপরে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ও আরেকটি ইনভেস্টর রেজিলিয়ান্স।

বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে ইউনুসুর রহমান বলেন, আইওএসকো তাদের ওয়েবসাইটে একজন স্মার্ট ইনভেস্টরের রেজিলিয়ান্সের জন্য কি কি করতে পারে, সে সম্পর্কে ৬ অনুশাসন দিয়েছে। আর সাসটেইনেবল ফাইন্যান্সের জন্য যা যা করা যেতে পারে, সে সম্পর্কে তারা ৪ অনুশাসন দিয়েছে। আমরা যদি বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ থেকে কিছু শিখতে চাই, তাহলে এই ১০ অনুশাসন আমাদের বিভিন্ন বিষয়ে সাহায্য করতে পারে।

ইউনুসুর রহমান বলেন, সাম্প্রতিককালে আমরা দেখছি যে ইনফরমেশন টেকনোলজির সাথে সাথে এই ফিনটেকে খাতেও যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। আমরা ফাইন্যান্সিয়ালি টেকনোলজির যে বিষয়টা সামনের দিকে আমরা ব্যবহার করবো, এই ব্যবহারের সাথে সাথে আমাদের সাইবার হুমকি বা সাইবার সিকিউরিটির বিষয়েও যথেষ্ট যত্নবান এখন থেকেই হওয়া উচিত। আর ফাইন্যান্সিয়ালি টেকনোলজি যত বেশি ব্যবহার করবো, তার সাথেও কিছু রিস্ক আছে, সে রিস্কগুলোকে এককথায় আমরা সাইবার হুমকি বলে। সাইবার টেকনোলজির সাথে সাথে এই বিষয়গুলো নিয়ে আমদের জানতে হবে। আর এ সম্পর্কেও আমরা সচেতন হব।

মোবাইল এ্যাপ ব্যবহার বাড়ানোর ওপরে জোর দিয়ে ইউনুসুর রহমান বলেন, একটা বিষয়ের উপরে আমি একটু বেশি গুরুত্ব দিতে চাই, আর সেটা হলো কিভাবে মানুষ মোবাইল এ্যাপ ব্যবহার করে স্টক এক্সচেঞ্জের কার্যক্রমের মধ্যে বা ট্রেডিংয়ের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। এ পার্টে বোধহয় আমাদের সব চাইতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

অনুষ্ঠানে ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, আমরা সবাই টেকনোলজির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গিয়েছি। অনেকে হয়তো বুঝিতে পারি না। একটা সময় ছিল আমারা ক্যাসেট প্লেয়ার ব্যবহার করতাম। সেটা কিছুদিন পরে সিডিটে কনভার্ট হলো। এর পর আসলো পেন ড্রাইভ। আবার আমরা আগে ব্যবহার করতাম ক্যামেরা। তার সাথে ফুজি। তারপর আসলো ডিজিটাল ক্যামেরা। কিন্তু বর্তমানে আমরা সেটাও ভুলতে বসেছি শুধু একটা মাত্র যন্ত্র, আর সেটা হচ্ছে একটা মোবাইল ফোন। এই মোবাইলে এমন এক টেকনোলজি আসলো, যেটা ভিডিও প্লেয়ারকে শেষ করে দিল, কলমকে শেষ করে দিল, আমাদের এই ক্যাসেট প্লেয়ারকে শেষ করে দিল। সব কিছু একটা জিনিসের মধ্যে চলে আসল। কত সহজ হয়ে গেল আমাদের কাজগুলো। এই টেকনোলজিতে যে এডভান্সমেন্ট, সেটা কিন্তু আমাদের জন্য অত্যান্ত সুখকর একটা বিষয় হয়ে আসল।

একই ভাবে কিন্তু আমাদের ডিএসই একই পথে হেটেছে। অর্থাৎ ১৯৯৮ এর আগে আমরা কাগজের শেয়ারে ট্রেড করতাম। এবং বাই সেল বাই সেল (অকশান মত) করে আমরা ট্রেডগুলো অপারেটর করতাম। কিন্তু ১৯৯৮ থেকে একটা আলটিমেটলি অটোমেটিক ট্রেডিং সিস্টেমে আসল। এবং ২০০৪ এ যখন সিডিবিএল হলো, তখন কিন্তু আমরা কাগজের শেয়ার আর দেখলাম না। তখন আমাদের মধ্যে একটা ভয় ছিল, আমাদের হাতের সামনে যে শেয়ার দেখতে পাচ্ছি, সে শেয়ারটা আলটিমেটলি কোথায় যাবে। এখন কিন্তু আমরা শুধুমাত্র একটা রিপোর্ট দেখতে পাই, সেটার সাথেও কিন্তু আমরা সবটা খাপ খাইয়ে নিয়েছি। অতএব আমরা কিন্তু টেকনোলজির সাথে একসাথেই এগোচ্ছি।

এরপরে ডিএসই আরও নতুন নতুন সফটওয়্যারের আবির্ভাব ঘটাল। এবং ধারাবাহিক ভাবে আমরা আপডেট হতে থাকলাম এই টেকনোলজির সাথে। কিন্তু ২০২০ সালে যখন করোনার পাদুর্ভাব হলো, তখন ডিএসই তিন মাসের জন্য ট্রেড বন্ধ করে দিল। তখন আমরা প্রথমবারের মত ফিল করলাম যে, আমাদের এডজাস্টমেন্ট যতটুকু হওয়া উচিত ছিল ততোটুকু কিন্তু হয়নি। এরপরে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপে গ্রহণ করেছি যাতে করে আর কোনোদিন ট্রেডিং বন্ধ না হয়। এবং আমরা সেই প্রসেসর দিকে এগোচ্ছি।

আরও বলেন, সামনের দিকে যে টেকনোলজিগুলো আসবে, সেগুলো যদি এডাপ্ট করতে হবে এবং মার্কেটে যদি টিকে থাকতে হয়, তাহলে আমাদের ব্রোকার্স হাউজগুলোর ফাইনান্সিয়ালি আরও ইনভলভ বাড়াতে হবে এবং ফাইনান্সিয়ালি সলভমেন্ট হতে হবে। একই সাথে দক্ষ জনবলেরও কিন্তু প্রচুর প্রয়োজন রয়েছে। ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে টেকনোলজি ব্যবহার করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে দক্ষ জনবল তৈরি করতে হবে। আর সেটা ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে হোক বা বাইরে থেকে রিক্রুয়েটের মাধ্যমেই হোক।

বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের জন্যও কিন্তু টেকনোলজি একটা বিরাট পার্ট। মাননীয় টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী কিন্তু আমাদের বলেছেন, সামনে যে দিন আসছে বা এখন যে দিন চলছে সেখানে কিন্তু আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সি আপনাকে বলে দিতে পারে যে আপনি ইনভেস্টমেন্ট কোথায় করবেন। আমাদেরও কিন্তু এই টেকনোলজি সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন