বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর অপরিবর্তিত
লেনদেন
- ডিএসইতে ১৫শ কোটি, সিএসইতে ১০৩ কোটি
- সেরা ডিএসইতে ওরিয়ন ফার্মা, সিএসইতে ব্যাংক এশিয়া
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল মঙ্গলবার সব ধরনের সূচক পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। লেনদেন পরিমাণ ডিএসইতে বাড়লেও সিএসইতে কমেছে। লেনদেন বেড়ে ডিএসইতে ১৫শ কোটি টাকার কাছাকাছিতে এসেছে। লেনদেন কমে সিএসইতে ১০৩ কোটি টাকায় ঘরে অবস্থান করেছে। দুই স্টকে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর অপরিবর্তিত।
ডিএসইর লেনদেন বৃদ্ধির প্রসঙ্গে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, গতকাল ডিএসইতে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর অপরিবর্তিত ছিল। এরপরও ক্রয়ের চাপ কম ছিলো। বিক্রয়ের চাপ বেশি। এই চাপের কারণে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। অপরদিকে সিএসইতেও বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর অপরিবর্তিত ছিল। লেনদেন পরিমাণও কমেছে। লেনদেন কমেও ক্রয়ের চাপ কম ছিলো। বিক্রয়ের চাপ বেশি ছিলো।
তারা আরো বলেন, সরকারের নতুন সময় সূচির প্রথম কার্যদিবস ডিএসইতে গত ২৪ আগস্ট পতন হয়েছিল। যা আগের টানা ছয় কার্যদিবস উত্থানের পর এই মন্দা। পতন পরের দুই কার্যদিবস (বৃহস্পতিবার ও রবিবার) উত্থানে ছিল পুঁজিবাজার। ওইসময় লেনদেন দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছিলো। পরেরদিন সোমবার লেনদেনে ভাটা পড়ে। সেখান থেকে পরের দুই কার্যদিবস লেনদেন কিছুটা বাড়ে। পরেরদিন লেনদেন আবারো কমে। এরপরের কার্যদিবস লেনদেন বেড়ে ২৩শ কোটি টাকায় ওঠেছিল। এরপরে জোয়ার ভাটায় চলে পুঁজিবাজারের লেনদেন। তবে ২০ সেপ্টেম্বর লেনদেন বছরের সেরা রেকর্ড করেছিলো। ওইদিন লেনদেন ২৮শ কোটি টাকা এসেছিলো। পরে ফের ভাটা পড়ে লেনদেনে। এ ধারায় গতকাল লেনদেন ১৫শ কোটি টাকার নিচে নেমে আসে।
গতকাল ডিএসইতে ১ হাজার ৪৯৪ কোটি ৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবস সোমবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৩০০ কোটি ১৭ লাখ টাকার শেয়ার। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২১ দশমিক ৯২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৪৮৯ দশমিক ৯০ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক ১৫ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক ৭ দশমিক ৪২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রম ২ হাজার ৩১৬ দশমিক ৪১ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৪১৩ দশমিক ২৪ পয়েন্টে।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭০টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৬০টি এবং কমেছে ১৩৬টির। শেয়ার পরিবর্তন হয়নি ১৭৪টির। এদিন ডিএসইতে ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন ওরিয়ন ফার্মা ১১৯ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে বেক্সিমকো ৯৪ কোটি ১০ লাখ টাকা, সাইফ পাওয়ারটেক ৬৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, ইস্টার্ন হাউজিং ৬৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ৬২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা, বিডিকম ৫১ কোটি ৫২ লাখ টাকা, জেএমআই হসপিটাল ৪৭ কোটি ৭২ লাখ টাকা, ইউনিট হোটেল ৪৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকা, শাইনপুকুর ৩৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা এবং এডিএন টেলিকম ২৯ কোটি ২৯ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
অপরদিকে, সিএসইতে গতকাল লেনদেন হয়েছে ১০৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা শেয়ার। আগের কার্যদিবস সোমবার ১১৫ কোটি ৮১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৫৩টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৬০টি, কমেছে ৯৪টি এবং পরিবর্তন হয়নি ৯৯টির। এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১৮ দশমিক শূন্য ২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ১৫৩ দশমিক ৭৩ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক ৪ দশমিক ৭২ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ১০ দশমিক ৭২ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ১০ দশমিক ৯৮ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক ৪ দশমিক ৪১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩৮৬ দশমিক ৬২ পয়েন্টে, ১৩ হাজার ৪৫৭ দশমিক শূন্য ৩ পয়েন্ট, ১১ হাজার ৪৮৬ দশমিক ৬২ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ২৩০ দশমিক ৯২ পয়েন্টে।
এদিন সিএসইতে ব্যাংক এশিয়ার শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন ব্যাংক এশিয়া ৪৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে পূবালি ব্যাংক ২২ কোটি ৬১ লাখ টাকা, ওয়ান ব্যাংক ৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, ইসলামী ব্যাংক ২ কোটি ২৬ লাখ টাকা, কেয়া কসমেটিকস ২ কোটি ৪ লাখ টাকা, বেক্সিমকো ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, সাইফ পাওয়ারটেক ১ কোটি ৮২ লাখ টাকা, ওরিয়ন ফার্মা ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা, প্রগতি লাইফ ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা এবং জেএমআই হসপিটাল ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।