ঢাকা | বৃহস্পতিবার
১৫ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পোকার আক্রমণে দিশেহারা চাষি

পোকার আক্রমণে দিশেহারা চাষি

এক তৃতীয়াংশ ধানগাছে মাজরা পোকার আক্রমণ

ধানের চারারোপনের পর থেকে পঁচানী ও কারেন্ট পোকার পর এখন মাজরা পোকার আক্রমণে ফসল ধ্বংসের মুখে। ফলন নিয়ে চরম আতঙ্কে আছি: কৃষক হামিদুল মিয়া

বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে চলতি আমন চাষ শুরু করছে কৃষক। তবে গাইবান্ধা সদর উপজেলাসহ সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাদুল্লাপুর, পলাশবাড়ীতে চলতি আমন ধান ক্ষেতে পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন  চাষিরা । বিশেষ করে মাজরা  পোকায় আক্রান্ত হয়ে ধানগাছ মরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এতে ফলন নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন কয়েক উপজেলার কৃষকরা। অন্যদিকে সমস্যা সমাধানে কৃষি বিভাগ মাঠ পর্যায়ে মনিটরিং অব্যাহত রেখেছেন।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, তারাপুর, হরিপুর, চন্ডীপুর, কাপাসিয়া শীপুরসহ প্রায় ১৮টি ইউনিয়নের মধ্য আমন চাষে আক্রন্ত করছে মাজরা পোকা। এলাকায় একের পর এক জমিতে মাজরা পোকার আক্রমণে ফলন্ত ধানের চারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে জমির প্রায় এক তৃতীয়াংশ ধানগাছ এভাবে আক্রান্ত হয়েছে। যারা দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছেন তাদের ফসল কিছুটা রক্ষা পেলেও অনেকের ক্ষেত প্রায় পুরোটাই নষ্ট হওয়ার পথে।

শীপুর ইউনিয়নের কুদ্দুস মিয়া বলেন, কয়েকদিন তীব্র রোদ কখনো টানা বৃষ্টিতে পড়ার কারণে জমিতে যাওয়া হয় নি। সে সঙ্গে একদিন জমিতে যাওয়ার পরে দেখি পাড়ার কৃষক আনোয়ার তার জমিতে কীটনাশক স্প্রে করছিলেন। তিনি বলেন, আমি চলতি বছর প্রায় ৬ বিঘা জমিতে স্বর্ণা-৫ ও গুটি স্বর্ণা ধানের চাষ করেছি। চারা রোপনের পর থেকে নানা সমস্যায় ভুগছি। প্রথম দিকে কারেন্ট পোকার আক্রমণ ঘটে। পরে পাতা মরা ও পঁচানী রোগ দেখা দেয়। এখন শুরু হয়েছে মাজরা পোকার ব্যাপক আক্রমণ। এবার যে হারে মাজরা পোকা ধরেছে, আগে কখনও এমনটা দেখা যায়নি।

হামিদুল মিয়া বলেন, রোপনের পর থেকে পঁচানী, কারেন্ট পোকা ও এখন মাজরা পোকার আক্রমণে ফসল ধ্বংসের মুখে। ফলন নিয়ে চরম আতঙ্কে আছি।

জাহিদুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন থেকে সারের সমস্যা নিয়ে ঘুরতে ছিলাম। এখন আবার কান্টের পোকা, মাজরা পোকা আমাদের চিন্তা ফেলছে। যে ফসল না পাইলে আমাদের পরিবারের না খেয়ে থাকতে হবে। পুরো বছর কি চাল কিনে খাওয়া যায়। পরিবারের ১২ জন সদস্য তাদের নিয়ে খুব চিন্তায় পড়তে হবে আমাদের।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার রাসেদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি। ইউনিয়নভিত্তিক দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষি উপ-সহকারি কর্মকর্তার (বিএস) কে মনিটরিং এর জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে আমরাও মাঠ পর্যায়ে যাচ্ছি। কৃষকদের পরামর্শ বিষয়ে বলেন, আমরা তাদের পার্চিং পদ্ধতি (ক্ষেতের মধ্যে গাছ বা বাঁশের ডাল পুতে দিতে বলেছি) ওই ডালে পাখি বসে পোকাগুলোকে খেয়ে ফেলবে। পাশাপাশি জমিতে কিটনাশক স্প্রে করারও পরামর্শ দিচ্ছি। আমন মৌসুমে  জেলায় ১ লাখ ২৯ হাজার  হেক্টর জমিতে আমন চাষ করা হচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন