সয়াবিন তেল, পাম তেল ও চিনি বিক্রিতে কোম্পানিগুলো যে মুনাফা করছে, তা আরেকটু কমানোর সুযোগ আছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)। সংস্থাটি গত বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া এক অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদনে এসব কথা বলেছে।
৯ পণ্য অর্থাৎ চাল, আটা, ময়দা, সয়াবিন তেল, পাম তেল, চিনি, মসুর ডাল, এমএস রড ও সিমেন্টের দাম বেঁধে দেওয়া হবে বলে গত ৩০ আগস্ট সিদ্ধান্ত নেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসে বিটিটিসি প্রতি মাসে এসব পণ্যের দাম নির্ধারণের কাজ করবে এবং ১৫ দিনের মধ্যে কাজটি শুরু হবে বলে ঘোষণা দেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
দুই সপ্তাহ শেষ হওয়ার পর বিটিটিসি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে গতকাল প্রতিবেদন পাঠিয়েছে। তারা বলেছে, সয়াবিন, পাম তেল ও চিনির সরবরাহব্যবস্থায় (সাপ্লাই চেইন) মুনাফা কিছুটা সংকুচিত করার সুযোগ আছে। এ সুপারিশ করার আগে আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছে বিটিটিসি।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যানুযায়ী, বৃহস্পতিবার বাজারে এক লিটার সয়াবিন তেল ১৯০ থেকে ১৯৫, এক লিটার সুপার পাম তেল ১৪৫ থেকে ১৫০ আর এক কেজি চিনি ৯০ থেকে ৯৫ টাকা দরে কেনাবেচা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদনে চালের দাম বেঁধে দেওয়ার ব্যাপারে কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করেছে বিটিটিসি। বিটিটিসি বলেছে, এ ক্ষেত্রে প্রধান দায়িত্ব পালন করতে পারে খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া মসুর ডাল, আটা ও ময়দার বিষয়ে সুপারিশ করতে ১৫ দিন সময় চেয়েছে বিটিটিসি। রড ও সিমেন্টের জন্য সংস্থাটি সময় চেয়েছে এক মাস। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
অসুস্থ থাকায় বিটিটিসির অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদনের বিষয়ে খোঁজ নিতে পারেননি বলে একটি গণমাধ্যমকে জানান বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ। তবে পুরো বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে ১৯ সেপ্টেম্বর আবার বৈঠক ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বাজারের গরমিল
বিটিটিসি ৯ পণ্যের ওপর দুই সপ্তাহ আগে যে প্রতিবেদন দাখিল করেছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে, সে অনুযায়ী আন্তর্জাতিক বাজারে এক বছরে স্টিল স্ক্র্যাপের দাম কমেছে ১৪ শতাংশ। অথচ দেশের বাজারে ৬০ গ্রেডের রড ১৫ শতাংশ এবং ৪০ গ্রেডের রডের মূল্য ১৬ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া সিমেন্টের দাম বেড়েছে এক বছরে ৩১ শতাংশ।
এদিকে গতকাল শুক্রবার জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের ১৬তম বার্ষিক সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বিশ্ব বাজারের সাথে সঙ্গতি রেখে আগামী ৭ দিনের মধ্যে ৯টি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ঠিক করে দেওয়া হবে। বাজার অস্থিতিশীলতা নিয়ন্ত্রণে সকল ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে পণ্যের মূল্য তালিকা ঝোলানো বাধ্যতামূলক করা হবে।
তিনি বলেন, আমরা ট্যারিফ কমিশনকে ১৫ দিন সময় দিয়েছি। আরও হয়তো ৭ দিন সময় লাগবে এ কাজে। আমরা ইতোমধ্যে খাবার, স্টিলসহ ৯টি পণ্যের দাম ঠিক করে দিয়েছি। যাতে ব্যবসায়ীদের অনৈতিক সুযোগ নেওয়া কমে যায়।