ঢাকা | বুধবার
১৪ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
৩১শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী

চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী
  • পাইকারি বাজারে বস্তাপ্রতি বেড়েছে সর্বোচ্চ ২৫০ টাকা
  • আকস্মিক দাম বৃদ্ধিতে ক্ষুদ্ধ ক্রেতা

দেশে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আমদানিতে সরকার ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রত্যাহার করার প্রভাবে চালের বাজার নিম্নমুখী হয়। সরকার দেশে শুল্ক কমানোর দুই সপ্তাহ না যেতেই ভারত চাল রপ্তানিতে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে; যার প্রভাবে পুণরায় আমদানি চালের দাম বাড়তে শুরু করেছে। দেশে আমদানি চালের সিংহভাগই আসে ভারত থেকে। শুধু আমদানির চাল নয়, ভারতের রপ্তানি শুল্ক বাড়ানোকে কেন্দ্র করে দাম বেড়েছে দেশীয় চালের বাজারেও। বস্তাপ্রতি বেড়েছে সর্বোচ্চ আড়াইশ টাকা পর্যন্ত। চালের দাম বৃদ্ধিতে চাপে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

চট্টগ্রামের আড়তদাররা বলছেন, ডলার ও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে চালের আমদানি ব্যয় বেড়ে গিয়েছিল। তাই চালের বাজার ক্রমেই বাড়তে থাকে। তবে সরকার গত মাসের শেষ দিকে শুল্ক কমানোর কারণে দাম কমলেও এখন ভারত আবার রপ্তানি শুল্ক বসিয়েছে। ভারত থেকে বেতি আতপ চালই বেশি আসে, তাই এর প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারে।

চট্টগ্রামের দুই প্রধান চালের আড়ত চাক্তাইয়ের চালপট্টি ও পাহাড়তলীতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দুদিনের ব্যবধানে বাজারে জিরাশাইল সিদ্ধ, নাজিরশাইল সিদ্ধ, স্বর্ণা সিদ্ধ, পাইজাম সিদ্ধ, মিনিকেট সিদ্ধ, মিনিকেট আতপ, কাটারিভোগ সিদ্ধ, কাটারিভোগ আতপ, বেতি আতপ ও মোটা সিদ্ধের দাম ৫০ কেজি ওজনের বস্তায় সর্বোচ্চ বেড়েছে ২৫০ টাকা পর্যন্ত। চালের আড়তদাররা জানান, বর্তমানে পাইকারিতে বেতি আতপ ২৫০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৩০০ টাকা, পাইজাম আতপ ১০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৭০০ টাকা, মোটা সিদ্ধ প্রতি বস্তা ১০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ২০০ টাকা, জিরাশাইল সিদ্ধ বস্তায় ১৫০ টাকা বেড়ে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫০০ টাকায়। এছাড়া মিনিকেট সিদ্ধ ১০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৯০০ টাকা এবং মিনিকেট আতপ ১৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ টাকায়।

অন্যদিকে পাইজাম সিদ্ধ ২০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৯০০ টাকা, স্বর্ণা সিদ্ধ ১০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৬০০ টাকা, নাজিরশাইল সিদ্ধ ২০০ টাকা বেড়ে ৩ হাজার ৯০০ টাকা, কাটারিভোগ আতপ ২০০ টাকা বেড়ে ৩ হাজার ৮০০ টাকা এবং কাটারিভোগ সিদ্ধ ২০০ টাকা বেড়ে বর্তমানে ৩ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে বাজারে চালের দাম বৃদ্ধি পাওয়াতে চাপে পড়েছে সাধারণ মানুষ। নগরীতে বাজার করতে আসা একাধিক সাধারণ ক্রেতা ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে আকস্মিক চালের দাম বৃদ্ধিতে। ভোক্তাদের অভিযোগ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিস্ক্রিয়তার সুযোগ নিয়ে অসাধু ব্যবসায়িরা ইচ্ছামাফিক চালসহ নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি করে মানুষকে ঠকাচ্ছে। ভোক্তারা আক্ষেপ করে বলেন এসব ভোগান্তি দেখার যেন কেউ নেই।

পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এসএম নিজাম উদ্দিন বলেন, ভারত সিদ্ধ চাল ছাড়া কিছু কিছু চাল রপ্তানিতে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার কারণে চালের বাজার বাড়ছে। এর আগে আমাদের দেশে আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রত্যাহারের কারণে চালের দাম নিম্নমুখী ছিল। বর্তমানে আমদানি করা চালের পাশাপাশি দেশিয় চালের দামও বাড়ছে।

চট্টগ্রাম চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর আজম বলেন, ভারত থেকে আমরা প্রতি টন বেতি আতপ চাল আমদানি করতাম ২৮৫ থেকে ৩০০ ডলারে। স্বর্ণা সিদ্ধ ৩৮০ ডলার এবং নাজিরশাইল সিদ্ধ ৫০০ ডলারে আমদানি করতাম। এসব চালের মধ্যে বেতি আতপ চালের আমদানি ব্যয় কম। পক্ষান্তরে আমাদের দেশিয় বেতি চালের দাম বেশি। বিষয়টি ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বুঝতে পেরে কেবল মাত্র বেতি আতপ চালের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে। স্বাভাবিকভাবে এখন বেতিসহ সব ধরনের চালের দামে প্রভাব পড়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন