ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডাকাতির শিকার ডাকাতিয়া!

ডাকাতির শিকার ডাকাতিয়া!

চাঁদপুরের বালুখেকো চেয়ারম্যান সেলিম খানের পতন ঘটলেও আরেক সেলিম খানের আবির্ভাব ঘটেছে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে। তিনি হলেন, উপজেলার সাতবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ কবির মজুমদার টুটুল। গত ৮ মাসে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন ডাকাতিয়া নদীর সাতবাড়ীয়া অংশ। চলতি বছরের গত ৭ জানুয়ারি শেষ হওয়া ইউপি নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর থেকে সাতবাড়ীয়া ইউনিয়নের যেকোনো গ্রামেই বালু উত্তোলন হোক না কেন, সেটা নিয়ন্ত্রণ করেন টুটুল চেয়ারম্যান। এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর।

সরেজমিনে দেখা যায়, সাতবাড়ীয়া ইউপির নাইয়ারা, সাতবাড়ীয়া গ্রামে চারটি ও পূর্ব সাতবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটের কথা বলে বালু তুলে বিক্রি করছেন তিনি। ডাকাতিয়া নদীর ৫টি স্থানে ৩টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে রাতদিন ২৪ ঘণ্টা অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মচ্ছপ চলছে। আর এই অবৈধ কর্মযজ্ঞের ফলে আশেপাশের ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়ে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা ২০১০ এর ১৫ (১) এ আইনের ধারা ৪ এ বর্ণিত কতিপয় ক্ষেত্রে বালু বা মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ সংক্রান্ত বিধানসহ অন্য কোনো বিধান কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অমান্য করিলে বা এ আইন বা অন্যকোনো বিধান লংঘন করিয়া অথবা বালু বা মাটি উত্তোলনের জন্য বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করিলে সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী ব্যক্তিবর্গ (এক্সিকিউটিভ বডি) বা তাহাদের সহায়তাকারী কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ অনূর্ধ্ব ২ বৎসর কারাদণ্ড বা সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা হইতে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

অথচ এই আইনের তোয়াক্কা না করে ডাকাতিয়া নদী থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বালু উত্তোলন কাজে যুক্ত ড্রেজার মেশিনের চালক শিফাত বলেন, চেয়ারম্যানের জমি ভরাট করছি। স্থানীয় বাসিন্দা মীর হোসেন বলেন, নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে ঘরবাড়ি, জমাজমির ক্ষতি হচ্ছে। টুটুল চেয়ারম্যান নিজের প্রভাব খাটিয়ে বালু তুলছেন।

অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে সাতবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ কবির মজুমদার টুটুল বলেন, কে বালু তুলছে বলেন? আজ এসি ল্যান্ড ফোন করছে, আমি বন্ধ করে দিছি। আমি কেন করবো? আমার বাপের জায়গা নাকি? এরপর কোনো কথা না বলে ফোন কেটে দেন।

জানতে চাইলে নাঙ্গলকোট উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মো. আশরাফুল হক বলেন, নদী থেকে বালি উত্তোলনের সবকিছু বন্ধ করে দিব।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন