ঢাকা | শুক্রবার
২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরবরাহ স্বাভাবিকেও দাম বেশি

সরবরাহ স্বাভাবিকেও দাম বেশি

আবারও বাড়লো ডিমের দাম

আবারও অস্থির হয়ে উঠছে ডিমের বাজার। সরবরাহ ঠিক থাকলেও সাত দিনের ব্যবধানে বেড়েছে ডিমের দাম। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে। কাওরান বাজারের বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত সপ্তাহে প্রতি ডজন ডিমের দাম ছিলো ১২০ টাকা। তবে দাম বেড়ে এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়।

বাজারে ভোক্তা অধিপ্তরের অভিযানসহ সরকারে নানা উদ্যোগে অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়া ডিমের দাম কিছুটা কমে এসেছিল। দাম কমে আসার এই স্বস্তি টেকেনি বেশিদিন। ১০ থেকে ১২ দিনের ব্যবধানে প্রতি ডজন ডিমের দাম বেড়েছে ১৫ টাকা। হাতিরপুল বাজার, কারওয়ান বাজার ঘুরে জানা গেছে, প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা দরে। ১০ টাকা কমে সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়।

সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে,  প্রতি হালি ডিম বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৪৩ টাকায়। সেই হিসাবে প্রতি ডজনের দাম দাঁড়ায় ১২০ থেকে ১২৯ টাকা। সংস্থাটির তথ্য বলছে, গত এক সপ্তাহে ডিম ডজনে বেড়েছে ৯ দশমিক ২১ শতাংশ। আগস্টের শুরুর দিকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর দফায় দফায় বাড়তে থাকে ডিমের দাম। এক পর্যায়ে প্রতি ডজনের দাম পৌঁছায় ১৬০ টাকায়। এরপর নানা পদক্ষেপে দাম কমতে শুরু করে। ১০ থেকে ১২ দিন আগে তা কমে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় নেমে এসেছিল।

কারওয়ান বাজারের ডিম ব্যবসায়ী সামছুল আলম বলেন, বেশ কয়েকদিন ডিমের বাজার ছিলো অস্থির। এরপর সরকারের নানা পদক্ষেপে দাম কমেছিলো। এখন আবার বেড়েছে। গত সপ্তাহে বিক্রি করেছি ১২৫ টাকায়। এখন ১৩৫ টাকার নিচে বিক্রি করা যায় না। বাজারে সরবরাহ কমলে দাম বাড়ে। আসলে দাম বাড়া-কমার বিষয়টি নির্ভর করে পাইকারদের সরবরাহের ওপর।

এদিকে, কিছুটা দাম কমেছে ডালের। চার-পাঁচ মাস ধরে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হওয়া মসুর ডালের দাম পাঁচ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকা কেজি দরে। দেশি মসুর ডালের কেজি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। গত সপ্তাহের তুলনায় মুরগির দামে তেমন হেরফের দেখা যায়নি। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৬৫ থেকে ১৭৫ টাকা এবং সোনালি জাতের মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ‍বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। বিআর-২৮ ও পায়জাম জাতীয় চাল ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা এবং গুটি স্বর্ণাজাতীয় বা মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৩ টাকায়।

সবজির দাম নতুন করে না বাড়লেও আগের বাড়তি দরেই বিক্রি হচ্ছে। দুই-তিনটি ছাড়া বেশিরভাগ সবজির দাম ৫০ টাকার বেশি। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি সিম, টমেটো ও গাজর ১২০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি প্রতি পিস লাউ বিক্রি হয়েছে ৬০-৭০ টাকা। প্রতি কেজি বরবটি ৮০-৯০, করোলা ৮০, বেগুন ৬০-৭০, পটোল ৪০-৫০, ধুন্দল ৬০, ঝিঙা ৪০-৫০, ঢেঁড়শ ৪০ এবং প্রতি কেজি শসা বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা। অর্থ্যাৎ সব ধরনের সবজি এক সাপ্তাহে ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। তবে কিছুটা অনেকটা কমছে কাঁচা মরিচের দাম। বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজিতে। আলুর কেজি আগের মতোই বাড়তি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকা। তেলাপিয়া, পাঙাস মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৬০ টাকা। কৈ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। আকার ভেদে  চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে চিংড়ি এবং ইলিশ। চিংড়ির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। আর এক কেজি ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা। ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা। আর ৪০০-৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা।

বাজার দর নিয়ে বেসরকারি চাকরিজীবী মো. সোহাগ তফদার বলেন, প্রতিদিন নিত্যপণ্যের দাম নানা আজুহাতে বেড়ে চলছে। আগে নিম্ন আয়ের মানুষ ব্রয়লার খেয়ে মাংসের স্বাদ পূরণ করতো। বর্তমানে এই ব্রয়লারও মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে বেঁচে থাকা কষ্টকর হয়ে যাবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন