- সব সূচকের উত্থান, বাড়লো দর
- ডিএসইর লেনদেন সাড়ে ৬শ কোটিতে
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সব ধরনের সূচকের উত্থান হয়েছে। ডিএসইর লেনদেন সাড়ে ৬শ কোটি টাকার ঘরের কাছাকাছিতে অবস্থান করেছে। বেড়েছে দুই স্টকের বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর।
স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা যায়, গত ৩১ জুলাই (রবিবার) পুঁজিবাজারে বড় উত্থান হয়েছিল। রবিবারের মতো পরেরদিন সোমবারে পুঁজিবাজার উত্থান ছিল। এরপরের তিন কার্যদিবস (মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার) উত্থান ধারা অব্যাহত ছিল। উত্থান কারনে স্বস্তিতে ছিলো বিনিয়োগকারীরা। সেই স্বস্তি পরের চার কার্যদিবসের মন্দায় পুঁজিবাজারের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। টানা পতনে ক্রেতার সংখ্যা বহুগুণে হারায়। এরপর গত রবিবার উত্থানে ফিরে আসলো পুঁজিবাজার।
আরও জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৬৪৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৫৮৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার। গত রবিবার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৮০টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ১৬৮টি এবং কমেছে ৮২টির। শেয়ার পরিবর্তন হয়নি ১৩০টির।
এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৬ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১৭৫ দশমিক ২৩ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক ৪ দশমিক ৯১ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক ৫ দশমিক ২১ পয়েন্ট বেড়ে যথাক্রমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৯৯ দশমিক ৩০ পয়েন্ট এবং ১ হাজার ৩৫০ দশমিক ৯৩ পয়েন্টে।
এদিন ডিএসইতে বেক্সিমকোর শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন বেক্সিমকো ৪৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে সোনালি পেপার ৪২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, ফরচুন সুজ ২৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা, মালেক স্পিনিং ১৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং ১৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ১৯ কোটি ১১ লাখ টাকা, সী পার্ল বিচ ১৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, আইপিডিসি ফাইন্যান্স ১৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা, লার্ফাজ-হোল্ডসিম ১৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা এবং ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ১০ কোটি ৩৬ লাক টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
অপরদিকে সিএসইতে গত রবিবার লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা শেয়ার। আগের কার্যদিবস বৃহস্পতিবার ১৬ কোটি ৯৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৬৩টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ১০২টি, কমেছে ৬৮টি এবং পরিবর্তন হয়নি ৯৩টির।
এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৪৩ দশমিক ৬২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ১৭১ দশমিক ৩০ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক দশমিক ৩৬ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ৪২ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ২৬ দশমিক ১৬ পয়েন্ট এবং সিএসইআই সূচক দশমিক ৭৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩২৫ দশমিক ৮০ পয়েন্টে, ১৩ হাজার ৩০৬ দশমিক শূন্য ৫ পয়েন্টে, ১০ হাজার ৮৮৬ দশমিক শূন্য ৫ পয়েন্ট এবং ১ হাজার ১৪৯ দশমিক ৬২ পয়েন্টে।
এদিন সিএসইতে বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। বেক্সিমকো ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ফার কেমিক্যাল ৭১ লাখ টাকা, রবি ৫০ লাখ টাকা, বেক্সিমকো ৪৯ লাখ টাকা, জিপিএইচ ইস্পাত ৪৮ লাখ টাকা, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং ৪৬ লাখ টাকা, লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স ৪৫ লাখ টাকা, পাওয়ার গ্রিড ৩৪ লাখ টাকা, স্কয়ার ফার্মা ৩৪ লাখ টাকা এবং লার্ফাজ-হোল্ডসিম ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
গত ২৮ জুলাই ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণের পর থেকেই পুঁজিবাজার উত্থানমুখী ছিলো জানিয়ে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, এর ফলে টানা পাঁচ কার্যদিবস পুঁজিবাজারের সূচক বাড়ে। লেনদেনসহ অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর বাড়ে। এর সঙ্গে যোগ হলো ২ আগস্ট পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ হবে ক্রয়মূল্যের সিদ্ধান্ত। খবরটির পর লেনদেন ১২শ কোটি টাকার ঘরে চলে আসে। সব মিলিয়ে উত্থানে ছিলো পুঁজিবাজার। কিন্তু গত চার কার্যদিবস (রবিবার ও বৃহস্পতিবার) ফের ফিরে আসলো উল্টোমুখীতে। মন্দায় তলিয়ে গিয়েছিলো পুঁজিবাজার। পতনের কারণ হিসেবে জ্বালানি তেল অস্বাভাবিক বৃদ্ধির দিকেই আঙ্গুল তুললেন সবাই। সেই পতন পথ থেকে বেরিয়ে ফের উত্থানে ফিরলো পুঁজিবাজার।
আনন্দবাজার/শহক