দুয়ারে কড়া নাড়ছে শীত। সকালের কুয়াশা ভেজা এই শীতে বাজারে শোভা পায় সবজিসহ বিভিন্ন রকমের পণ্য। কৃষকরা অনেক আগে থেকেই শীতের সবজি উৎপাদনে প্রস্তুতি নিয়ে ছিলো। যার জন্য এখন তারা ভালো ফলন পাচ্ছেন।
তবে ভালো ফলন পেলেও সবজির ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় অখুশি কৃষকরা। কৃষকদের অভিযোগ তাদের থেকে কম দামে সবজি কিনে সেগুলোকে বিভিন্ন বাজারে তিন গুণ বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
কৃষকরা আগাম সবজি চাষ করায় শীতকালীন সবজিতে ভরপুর রয়েছে বাজারগুলো। তবে এই আগাম চাষে তেমন লাভ হয়নি কৃষকদের। এর কারণ পাইকাররা মাঠ থেকে কম দামে সবজি কিনে নিয়ে যায়, পরে তারা বাজারে এই সবজি বেশি দামে বিক্রি করছেন।
গতকাল সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) ঢাকার ধামরাইয়ে গিয়ে সবজি চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কৃষকদের কাছ থেকে ১৫ টাকা কেজিতে বেগুন কিনে নেয় পাইকাররা, এরপর তারা বাজারে ৪০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। এছাড়াও ফুলকপি ২০ টাকা দরে নিয়ে ৫০ টাকায়, বাঁধাকপি ২০ টাকা দরে নিয়ে ৫০ টাকায়, লাউ ১৫ টাকা দরে কিনে ৬০ টাকায়, আঁটি (মোড়া) লাল শাক ৩টাকা দরে কিনে ১০ টাকায়, মুলা ১২ টাকা দরে কিনে ৩০ টাকায়, আঁটি লাউ শাক ৮ টাকা দরে কিনে ৩০ টাকায়, পুঁই শাক কেজি ১০ টাকা করে কিনে ৪০ টাকায় বিক্রি করছেন পাইকাররা৷
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল দিকে কৃষকদের কথা অনুযায়ী আশুলিয়ার বাইপাইলে সবজি ও কাঁচামালের আড়তে গিয়ে দেখা যায় এর সত্যতা। দেখা গেছে কৃষকদের থেকে যে দামে কেনা হয়ে তার চেয়ে দুই গুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এখানে।
আরও পড়ুন: সস্তায় সবজি বিক্রি হচ্ছে বরগুনায়
ধামরাইয়ের খরারচর গ্রামের সামচুল হক বলেন, এবার ফলন ভালো পেয়েছি, কিন্তু বাজারের দামের তুলনায় অনেক কম দামে পাইকারদের কাছে এসব সবজি বিক্রি করতে হচ্ছে। ভেবেছিলাম ভালো ফলন হয়েছে তাই ভালো দাম পাবো। কিন্তু সবজি চাষের খরচই এখন ঠিকমতো উঠবে কিনা জানিনা।
পাইকারি সবজি ব্যবসায়ী বলছেন, সবজি অনেক দূর থেকে কিনে নিয়ে আসেন হয়। পরিবহন ও শ্রমিকের খরচ তুলতে চাষিদের থেকে কেনা দামের চেয়ে কিছুটা বেশি দামে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতে হয়। এছাড়াও পরিবহনের সময় অনেক সবজি পচে নষ্ট হয়ে যায়।
তবে খুচরা ব্যবসায়ী আকরাম হোসেন বলেন, সাধারণত শীতকালীন সবজির দাম নাগালের বাইরে থাকে এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি৷ শীতের শুরু থেকেই সব ধরনের সবজির দাম চড়া। আমরা যে দামে পাইকারদের থেকে কিনি তার থেকে সমান্য লাভে বিক্রি করি।
আনন্দবাজার/এম.কে